ওয়েইন রুনি ও গ্যারি নেভিলের মতে, ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হ্যারি কেইন| ছবি—সংগৃহীত
এবারের ইউরো শুরুর আগে ওয়েইন রুনির সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন গ্যারি নেভিল। রুনি তখন বলেন, তার চোখে হ্যারি কেইন ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ফুটবলার। সেই গল্প শুনিয়ে নেভিল বললেন, রুনির সঙ্গে তার দ্বিমত নেই। এবারের ইউরোতে অবশ্য সেরা ছন্দে নেই কেইন। তবু ফাইনালের একাদশে তার কোনো বিকল্প দেখেন না নেভিল।
ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটি কেইনেরই। সেখানে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন রুনিকে। তবে সর্বোচ্চ গোল স্কোরার মানেই তো আর সেরা ফুটবলার নন। ইংল্যান্ডের হয়ে যুগে যুগে মাঠ মাতিয়েছেন ববি চার্লটন, ববি মুর, গর্ডন ব্যাঙ্কস, জিমি গ্রিভস, গ্যারি লিনেকার থেকে শুরু করে আরও কত কত ফুটবলার।
এমনিতে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরার আলোচনায় চার্লটন ও মুরের নামই বেশি আসে বিশেষজ্ঞদের আলোচনায়। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দুই কিংবদন্তি নেভিল ও রুনির মতামত ভিন্ন। ইউরোর ফাইনালের আগে স্কাই স্পোর্টসকে সেটিই জানালেন নেভিল।
“চার-পাঁচ সপ্তাহ আগে, টুর্নামেন্ট তখনও শুরু হয়নি, ওয়েইন রুনির সঙ্গে কথা হচ্ছিল আমার। সে বলছিল, ‘ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হ্যারি কেইন।’ রুনির মতো একজন, এত বছর ধরে যে ইংল্যান্ডকে দেখছে, তার কাছ থেকে একটা বিশাল এক স্বীকৃতি। ওর সঙ্গে এখানে কোনো দ্বিমত নেই আমার।”
“হ্যারি কেইন সত্যিকার অর্থেই অসাধারণ। টটেনহ্যামে থাকার সময় আমি ওকে সবসময়ই বলতাম ‘গোল্ড’, প্রয়োজনের সময় সে জ্বলে উঠবেই। দুর্দান্ত এক চরিত্র সে।”
ইংল্যান্ডের জার্সিতে কেইনের রেকর্ড আসলেই দুর্দান্ত। ৯৭ ম্যাচে তার গোল ৬৬টি। রুনির ৫৩ গোলের রেকর্ড ছিল ১২০ ম্যাচে। চার্লটন ৪৯ গোল করেছিলেন ১০৬ ম্যাচে, লিনেকার ৪৪ গোল ৮০ ম্যাচে। ম্যাচপ্রতি গোলে অবশ্য তাদের চেয়ে এগিয়ে গ্রিভস। তার ৪৪ গোল এসেছে স্রেফ ৫৭ ম্যাচে।
একটি জায়গায় শুধু ইংল্যান্ড নয়, ইউরোপিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে সেরা কেইন। নকআউট ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ৯টি। ৮টি করে গোল নিয়ে যৌথভাবে দুইয়ে আছেন এখানে জার্ড মুলার, মিরোস্লাভ ক্লোসা, অঁতোয়ান গ্রিজমান ও কিলিয়ান এমবাপে।
এবারের ইউরোতেও তিন গোল করে এখনও পর্যন্ত যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলস্কোরার কেইন। তবে এটিও সত্যি, তার খেলায় এবার চেনা ধার দেখা যায়নি। ইংলিশ অধিনায়ক পিঠের চোট নিয়ে খেলছেন বলেও খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে। নেভিলের ধারণা, কয়েক দিন পরই জানা যাবে, আসলেই কোনো চোট নিয়ে এই আসরে খেলেছেন কেইন।
“এই টুর্নামেন্টে অবশ্যই সে তার সেরা মানের চেয়ে নিচে আছে। মনে হচ্ছে, কিছু একটা (চোট) বয়ে বেড়াচ্ছে সে। দু-এক সপ্তাহ পরে যদি জানা যায় যে, টুর্নামেন্টজুড়ে কোনো সমস্যা নিয়ে সে খেলেছে, তাহলে মোটেও অবাক হব না।”
সেমি-ফাইনালে ৮০ মিনিটের পর কেইনের বদলে মাঠে নেমেই দুর্দান্ত গোল করে ইংল্যান্ডকে জিতিয়ে দেন ওলি ওয়াটকিন্স। বদলি হিসেবে নেমে এখনও পর্যন্ত দারুণ খেলেছেন ইভান টনিও। কেইনের চোটের অস্বস্তি ও ছন্দহীনতার সঙ্গে ওই দুজনের দারুণ পারফরম্যান্স মিলিয়ে ব্রিটিশ ফুটবলে একটা আলোচনা চলছে যে, ফাইনালের একাদশ থেকে নিয়মিত অধিনায়ককে বাইরে রাখা হবে কি না।
“হ্যারি কেইন এমন একজন, এই মুহূর্তে তাকে কোনোভাবেই বাদ দেবে না গ্যারেথ সাউথগেট। আমি জানি, এরকম একটা ধারণা অনেকের আছে যে, তাকে ছাড়াই ইংল্যান্ড দল আরও ভালো করবে। কিন্তু তাকে বাদ দেওয়াটা গোটা দলে ভালো কোনো বার্তা দেবে না। পরিষ্কারভাবেই সে দলের নেতা এবং তার ওপর সাউথগেটের পূর্ণ আস্থা আছে।”
“প্রতিপক্ষ দলের দিক থেকে দেখলেও সে ইংল্যান্ডের মহিরুহ। এই মৌসুমে জার্মানিতে (বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে) গিয়ে সে গোল করার দিক থেকে ঝড় বইয়ে দিয়েছে। স্পেন দল, যারা নিজেরাও দুর্দান্ত, তারাও নিশ্চিত থাকবে যে রোববার কেইন একাদশে থাকবে। আগের ম্যাচগুলোয় তো ইভান টনি ও অলি ওয়াটকিন্স দেখিয়েছে যে, যদি প্রয়োজন পড়ে বা ইংল্যান্ডের অবস্থা ভালো না থাকে, তারা বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমে চিত্র বদলে দিতে পারে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh