ছবি: সংগৃহীত
চারদিন আগে রাওয়ালপিন্ডিতে ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল পাকিস্তান। সেই একই লক্ষ্য যখন লাহোরে কিউইরা দাঁড় করিয়েছে, এবারও বাবর আজমরা পারলেন না। ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে কেবল লড়াই করতে পেরেছেন ফখর জামান ও ইমাদ ওয়াসিম। তবে সেই লড়াই কাজে আসেনি। ৪ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল খর্বকায় নিউজিল্যান্ড! পাকিস্তানের মাটিতে কিউইদের প্রথম সারির কয়েকজন ক্রিকেটার যাননি, আইপিএলের খেলা থাকায়। ফলে সেখানে পা রাখা স্কোয়াডটিকে খোদ পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের কেউ কেউ দ্বিতীয় সারির দল বলে তাচ্ছিল্য করেছিলেন। সেই দলের কাছেই এবার তাদের টানা দ্বিতীয় পরাজয় দেখতে হলো! লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গতকাল (বৃহস্পতিবার) চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। তরুণ দুই পেসার উইল ও’রুকু এবং বেন সিয়ার্স মিলেই মূলত আটকে দিয়েছেন স্বাগতিকদের।
সিরিজ শুরুর আগেই বাবর জানিয়েছিলেন, কিউইদের সঙ্গে এবারের লড়াই হবে নিজেদের সেরা কম্বিনেশন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মিশন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই মূলত তাদের এই লক্ষ্য। গতকাল যার প্রমাণ দেখা যায় পাকিস্তান একাদশে। নিয়মিত পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহদের বসিয়ে এদিন ফেরানো হয় মোহাম্মদ আমির, ইমাদ ওয়াসিমদের। এছাড়া ইনজুরির কারণে আগেই ছিটকে গেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইরফান খানরা।
বিপরীতে তুলনামূলক দুর্বল দল নিয়েও নিজেদের সামর্থ্য জানান দিতে মরিয়া ছিল কিউইরা। গতকালও তাদের শুরুটা ছিল আগ্রাসী। প্রথম দশ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে তারা ৯৩ রান তুলে ফেলেছিল। সে হিসেবে শেষ দশ ওভার তারা কম রানই তুলতে সক্ষম হয়। সফরকারীদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামা টিম রবিনসনের চলতি সিরিজে অভিষেক হয়েছিল। তিনিই এদিন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেছেন। ৩৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫১ রান করেন রবিনসন।তাকে ওপেনিংয়ে ভালো সঙ্গ দিয়েছেন তুলনামূলক অভিজ্ঞ টম ব্লান্ডেল। পঞ্চম ওভারে তার বিদায়ে (১৫ বলে ২৮) ভাঙে ৫৬ রানের শুরুর জুটি। পরে ফিফটি করেই আউট হয়ে যান রবিনসনও। আগের ম্যাচে ৪২ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে জেতানো মার্ক চাপম্যান এবার ৯ বলে করেন ৮ রান। তিনে নেমে ২৬ বলে ৩৪ রান করেন ডিন ফক্সক্রফট। অধিনায়ক মাইকেল ব্রেসওয়েলের ২০ বলে ২৭ রানের সুবাদে দেড়শ ছাড়ায় সফরকারীরা। তবে উইকেটে থাকলেও প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি নিশাম, ১১ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ফলে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে তাদের রানের গণ্ডি থামে ১৭৮–এ।
পাকিস্তানের হয়ে আব্বাস আফ্রিদি মাত্র ২০ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন আমির, জামান খান, উসামা মির ও ইফতেখার আহমেদ। রানতাড়ায় স্বাগতিকদের শুরুটাই হয় নড়বড়ে। দ্বিতীয় ওভারের শেষ ডেলিভারিতেই মাত্র ৫ রান করে বিদায় নেন অধিনায়ক বাবর। ওপেনার সাইম আইয়ুবও (১৫ বলে ২০) ফেরেন পাওয়ার প্লের মাঝেই। আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ উসমান খান (১১ বলে ১৬) যথারীতি এদিনও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শাদাব খানও ফেরেন মাত্র ৭ রানে। ফলে তরুণ বোলিং আক্রমণের বিপরীতে বেশ বিপদেই পড়ে যায় পাকিস্তান। এই ম্যাচ দিয়ে চলতি সিরিজে প্রথম খেলতে নেমেছিলেন ফখর জামান। তিনিই একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পঞ্চম উইকেটে ইফতিখার আহমেদকে সঙ্গী বানিয়ে গড়েন ৪১ বলে ৫৯ রানের জুটি।
পরবর্তীতে শেষ ৪ ওভারে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে পাকিস্তানের যখন দরকার আর ৪৬ রান, তখন ইফতিখারের (২০ বলে ২৩) আউটে ফের চাপ সৃষ্টি হয়। সেই চাপ চূড়ান্ত বিপর্যয়ে রূপ নেয় খানিক পরই ফখরের বিদায়ে। ৪৫ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় অভিজ্ঞ ওপেনার ৬১ রান করেন। ফলে পাকিস্তানও আর পেরে ওঠেনি। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৮ রানের, ১৩ রান আসে ইমাদ-উসামার সম্মিলিত অবদানে। ফলে বৃথা যায় ইমাদের ১১ বলে ২২ রানের ইনিংসটি। কিউইদের হয়ে ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন পেসার ও’রুকু। আরেক পেসার বেন সিয়ার্স সমান রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
বিষয় : ক্রিকেট পাকিস্তান নিউজিল্যান্ড
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh