আর দশজনের মতো শামার জোসেফের দিনকালও চলছিল বেশ। জীবনের তাগিদে একটা সময় গার্ডের চাকরি নেন। তবে অন্যদের চেয়ে শামারের একটা বাড়তি গুণ ছিল, তিনি ক্রিকেটটা বুঝতেন, ভালোবাসতেন। সময় পেলে বল হাতে মাঠেও নেমে পড়তেন। এই ভালোবাসা আর টানই তাঁকে নিয়ে গেল অনেক দূর। এখন তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের নতুন তারকাও বনে গেলেন তিনি।
অথচ শৈশব, কৈশোরের বড় একটা সময় তাঁকে কাটাতে হয়েছিল দুর্গম এক গাঁয়ে। কেবল অভাব-অনটনই নয়, উন্নতির আলো কখনোই সেখানে উঁকি দেয়নি। বারাকারা ছিল উইন্ডিজের বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপ। সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীপথ। কয়েক বছর আগে সেখানে কোনো স্থানীয় সরকারও ছিল না। টেলিফোন ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে ২০১৮ সালে। এমন দুর্গম আর অবহেলিত গ্রাম থেকে আসা শামারের হাতে উঠল ব্রিসবেন টেস্টের সেরার পুরস্কার। শুধু কি তাই? সিরিজের সেরাও এই তরুণ।
পুরো টেস্টে বল হাতে নৈপুণ্য দেখিয়ে তুলে নেন সাত উইকেট। আর সিরিজে মোট ১৩ উইকেট। সঙ্গে ৫৭ রান। নিজের অভিষেকে এর চেয়ে আর ভালো কী বা হতে পারে। ক্যারিয়ারের এই সূচনা লগ্নটা এতটা রঙিন হবে, হয়তো জোসেফও ভাবেননি। খেলার জন্য পুরো প্রস্তুত ছিলেন না। এক দিন আগেও ব্যথায় কাতর ছিলেন। সাতসকালে যখন টিম ডাক্তার জানতে চান, কেমন অনুভব করছেন, তখনও তিনি বলেন ব্যথার কথা। তবু পিছু হটেননি, অভিষেক মঞ্চে নায়ক হবেন বলেই বল হাতে নেমে পড়েন ব্রিসবেনে।