ছবি: এএফপি
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও একবার স্নায়ুক্ষয়ী থ্রিলারের পর শেষ হাসি হাসল ভারত। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখল তারা। এই জয়ে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে নিজেদের দ্বিতীয় এবং সব মিলিয়ে রেকর্ড নবম এশিয়া কাপ শিরোপা নিশ্চিত করল ভারত।
রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে টস হেরে প্রথমে বোলিংয়ে নামে ভারত। ভালো শুরুর পরও ভারতীয় বোলারদের দাপটে ১৯.১ ওভারে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে, রান তাড়া করতে নেমে একসময় খেই হারালেও শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রোহিত শর্মার দল। টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোর-এর পর ফাইনালেও পাকিস্তানকে হারাল ভারত।
মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন ভারত চরম চাপে, তখন ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন তরুণ ব্যাটার তিলক বর্মা। চতুর্থ উইকেটে সঞ্জু স্যামসনের (২৪ রান, ২১ বলে) সঙ্গে ৫৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন তিনি। এরপর শিবাম দুবেকে (৩৩ রান, ২২ বলে) সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৪০ বলে ৬০ রানের আরেকটি কার্যকর জুটি বাঁধেন তিলক।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের এই প্রদর্শনীতে ৫১ বলে ৬৯ রানের এক অপরাজিত ও ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন তিনি, যেখানে ছিল ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার মার। ইনিংসের একদম শেষে যখন ৬ বলে দরকার ১০ রান, তখন হারিস রউফকে দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান তিলক। শেষমেশ টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলতে নামা রিঙ্কু সিং মিড অন দিয়ে চার মেরে ভারতকে শিরোপা এনে দেন। উল্লাসে মাতেন অপরাজিত থাকা তিলক।
পাকিস্তানের ব্যাটিং ধস, কুলদীপের ঘূর্ণি
এর আগে, পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুতে ছিল ভালো কিছুর আভাস। এক পর্যায়ে ১২.৪ ওভারে তাদের রান ছিল মাত্র ১ উইকেটে ১১৩। কিন্তু এরপরই ব্যাটিংয়ে চরম ধস নামে। ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান (৩৮ বলে ৫৭) এবং ফখর জামানের (৩৫ বলে ৪৬) বিদায়ের পর বাকি আটজন ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।
ভারতীয় স্পিনারদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে ৩৯ বলের মধ্যে ৩৩ রান যোগ করতে পাকিস্তান হারায় শেষ ৯ উইকেট। বল হাতে ভারতের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন কুলদীপ যাদব। প্রথম দুই ওভারে খরুচে (২৩ রান) হলেও পরের দুই ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন ৪টি মূল্যবান উইকেট। বাঁহাতি এই রিস্ট স্পিনার ইনিংসের ১৭তম ও নিজের শেষ ওভারেই শিকার করেন ৩ উইকেট। এছাড়া, ২টি করে উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল, বরুণ চক্রবর্তী ও জসপ্রিত বুমরাহ।
পাকিস্তানি বোলারদের লড়াই, তবে হারিসের ব্যর্থতা
সাদামাটা পুঁজি নিয়েও পাকিস্তানি বোলাররা লড়াইয়ে দলকে টিকিয়ে রেখেছিলেন। বিশেষ করে আবরার আহমেদ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নওয়াজ আঁটসাঁট বোলিং করলেও হারিস রউফ ছিলেন অত্যন্ত খরুচে। ৩.৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে তিনি চাপ কমাতে পারেননি। উল্টো ইনিংসের একেবারে শেষে এসে রউফের এলোমেলো বোলিং ভারতকে জয় এনে দিতে সাহায্য করে।
অসম্ভব চাপের মুখে তিলক বর্মার দৃঢ়তা এবং শেষদিকে দলের আক্রমণাত্মক মানসিকতাই ভারতকে তাদের সর্বোচ্চ ট্রফি জয়ের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh