দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, গ্যালারি ভর্তি বাংলাদেশি সমর্থকের উল্লাস। দেখে বোঝার উপায় নেই খেলাটা দুবাইয়ে হচ্ছে নাকি মিরপুর বা সিলেটে। কিন্তু ম্যাচের এক পর্যায়ে সেই উল্লাস প্রায় থেমে গিয়েছিল। ৯ বছর আগের বেঙ্গালুরুর দুঃস্বপ্নই যেন ফিরে এসেছিল দুবাইয়ে। তবে শেষমেশ সেটা হতে দেননি নাসুম আহমেদ। একটা সিঙ্গেল রান নিয়েই বাংলাদেশকে এনে দিলেন ৪ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস এক জয়। সুপার ফোরে দুর্দান্তভাবে শুরু হলো টাইগারদের অভিযান।
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য মোটেও স্বস্তিদায়ক ছিল না। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশের বোলারদের প্রথম পাওয়ারপ্লেতে কোনো সুযোগই দেননি শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। বিনা উইকেটে তুলে ফেলেন ৫৩ রান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়েও শেষদিকে দাসুন শানাকার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৬৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় লঙ্কানরা। মাত্র ৩৭ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে দলের মেরুদণ্ড হয়ে ওঠেন তিনি। ১৬৫-এর বেশি রান তাড়া করতে নেমে এর আগে ১৪ বারের মধ্যে ১৩ বারই হেরেছিল বাংলাদেশ। তাই এই স্কোরকে একরকম 'পাহাড়'ই মনে হচ্ছিল।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটাও হয়েছিল বাজেভাবে। রানের খাতা খোলার আগেই নুয়ান থুশারার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তানজিদ হাসান তামিম। তখনই আবুধাবির সেই পুরনো দুঃস্বপ্ন ফিরে আসার আশঙ্কা জাগে। তবে সেই বিপর্যয় ঠেকিয়ে দলের হাল ধরেন তাওহীদ হৃদয়। তার লড়াকু ব্যাটিংয়েই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ।
শেষ ওভারে যখন জয়ের জন্য মাত্র ৫ রান প্রয়োজন, তখন মনে হচ্ছিল জয় সহজেই চলে আসবে। কিন্তু জাকের আলী ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন। এর এক বল পরই শেখ মেহেদীও যখন বিদায় নেন, তখন গ্যালারিতে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। কিন্তু ঠিক তখনই নাসুম আহমেদ সিঙ্গেল নিয়ে দলকে এনে দেন স্মরণীয় এক জয়। ম্যাচ শেষে ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের কথাটাই সত্যি প্রমাণিত হয়, "এখন থেকে ম্যাচটা একমাত্র বাংলাদেশেরই। জেতাটাই স্বাভাবিক।"