× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ক্রিকেট

মিরাজ-তাসকিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভালো শুরু বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক

৩১ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৯ এএম । আপডেটঃ ৩১ আগস্ট ২০২৪, ১১:০১ এএম

সবুজ ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেট, আদ্রর্তাও ছিল যথেষ্ট। টস জিতে সেখানে আগে বোলিংয়ের সুযোগ। শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু এরপরও প্রথম সেশনে বাংলাদেশের বোলিং ছিল হতাশাজনক। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের শুরু থেকেই দেখা গেল যেন ভিন্ন এক দলকে। অসাধারণ বোলিং উপহার দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, জ্বলে উঠলেন তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানাও। বড় স্কোর গড়তে পারল না পাকিস্তান।

রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দিনে পাকিস্তান অলআউট ২৭৪ রানে। বাংলাদেশ শনিবার দিন শেষ করে কোনো উইকেট হারিয়ে ১০ রান নিয়ে।


পাকিস্তানের হয়ে ফিফটি করেন সাইম আইয়ুব, শান মাসুদ ও সালমান আলি আঘা। তবে তিনজনের কেউই যেতে পারেননি ৬০ রান পর্যন্ত।

বলা ভালো, তাদেরকে বড় স্কোর গড়তে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার মিরাজ। দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে ফ্লাইট, লুপ, কিছু টার্ন মিলিয়ে মনে রাখার মতো বোলিং উপহার দেন এই অফ স্পিনার।

তিন সংস্করণ মিলিয়েই বাংলাদেশর হয়ে পাকিস্তানে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি আগে ছিল কেবল মোহাম্মদ রফিকের। কিংবদন্তি বাঁহাতি স্পিনার ২০০৩ সালের সফরে পেশাওয়ার ও মুলতান টেস্টে পেয়েছিলেন এই স্বাদ।

১৪ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে দুর্দান্ত বোলিং করেন তাসকিন আহমেদও। তার শিকার তিন উইকেট।

আলাদা করে বলতে হবে নাহিদ রানার কথাও। উইকেট নিয়েছেন মোটে একটি, ওভারপ্রতি রান দিয়েছে চারের কাছাকাছি। কিন্তু তার বোলিং ছিল দিনের দর্শণীয় অধ্যায়গুলোর একটি। দ্বিতীয় সেশনের দুই স্পেলে আগুনঝরা বোলিং করেছেন ২১ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার। তার অন্তত দুটি ডেলিভারির গতি ছিল ১৪৯.৯ কিলোমিটার। ১৪৫-১৪৮ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন নিয়মিতই। গতির সঙ্গে বাউন্স আর আগ্রাসন মিলিয়ে ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলেছেন তিনি বারবার। যেভাবে মাথা খাটিয়ে বোলিং করেছেন, তাতে ফুটে উঠেছে দ্রুত শেখার প্রমাণ।

দুটি কঠিন ক্যাচসহ মোট চারটি ক্যাচ পড়েছে বাংলাদেশের। নয়তো পাকিস্তানের স্কোর আরও কম হতে পারত।

কুঁচকির চোটের কারণে শরিফুল ইসলামকে রাখা যায় একাদশে। এটিও ছিল বড় এক ধাক্কা।

সকালে ম্যাচের শুরুটাই বাংলাদেশের জন্য ছিল দুর্দান্ত। অফ স্টাম্প ঘেঁষা আউট সুইঙ্গার দিয়ে ম্যাচ শুরু করেন তাসকিন। টানা পাঁচ বল বাইরে নিয়ে শেষ বলটি ভেতরে ঢোকান তিনি। আব্দুল্লাহ শাফিকের রক্ষণ গলে তা উড়িয়ে দেয় বেলস।

আরেক প্রান্তে হাসান মাহমুদও ভালো শুরু করেন। তবে প্রথম আধ ঘণ্টার পর উইকেটের জন্য অস্থির হয়ে একটু আলগা বোলিং করেন এই পেসার। তাতে চাপটাও সরে যায় কিছুটা। একটু একটু করে থিতু হয়ে ওঠেন সাইম আইয়ুব ও শান মাসুদ।

নাহিদ রানা আক্রমণে এসেও ধরে রাখতে পারেননি চাপ। তার শর্ট বল ছক্কায় ওড়ান সাইম। পরে মিরাজকেও দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মারেন তিনি। আরেক প্রান্তে মাসুদ রান করতে থাকেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে।

প্রথম সেশনে আর উইকেট পড়েনি। ২৫ ওভারে রান উঠে যায় ৯৯।

মাসুদের ফিফটি আসে ৫৪ বলেই। প্রবল চাপে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক পাক খানিকটা স্বস্তির পরশ।

দ্বিতীয় সেশনের শুরু থেকেই দারুণ বোলিংয়ে চিত্র বদলে দেন মিরাজ। ফ্লাইট ও টার্নে পরাস্ত করে মাসুদকে থামান তিনি ৫৭ রানে।

১০৭ রানে থামে দ্বিতীয় উইকেট জুটি।

দলকে পরের উইকেটও এনে দেন মিরাজ। তবে সেটি ব্যাটসম্যানের উপহার। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মিরাজতে স্লগ করার চেষ্টায় স্টাম্পড হন সাইম (১১০ বলে ৫৮)।

অন্য প্রান্তে তখন আগ্রাসী বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের কাঁপিয়ে দিচ্ছেন নাহিদ। উইকেটও পেতে পারতেন দ্রুতই। তার বলে স্লিপে সাউদ শাকিলের সহজ ক্যাচ ছাড়েন মিরাজ।

শাকিল অবশ্য নতুন জীবনে খুব বেশি এগোতে পারেননি। তাসকিনের বাড়তি বাউন্স সামলাতে না পেলে বল স্টাম্পে টেনে আনেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান (১৬)।


সাকিব আল হাসান তখনও ছিলেন দৃশ্যপটের বাইরে। প্রথম ৪৭ ওভারে কেবল এক ওভার হাত ঘোরান তিনি। দ্বিতীয় সেশনে ফিরে অভিজ্ঞতার সবটুকু মেলে ধরে পাকিস্তানকে আরও চেপে ধরেন তিনি। রানে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া বাবর আজমকে চমৎকার এক আর্ম ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করেন বাংলাদেশের সফলতম বোলার।

দুই বল পরই জীবন পান নতুন ব্যাটসম্যান সালমান। শর্ট লেগে ডাইভ দিয়ে বল হাতে জমাতে পারেননি জাকির হাসান।

অন্য প্রান্তে টানা দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা নাহিদ অবশেষে পান পুরস্কার। তার বাড়তি লাফানো বল মোহাম্মদ রিজওয়ানের (২৯) ব্যাটে ছোবল দিয়ে যায় স্লিপের হাতে। স্পিডগানে বলের গতি দেখা যায় ১৩৪.৬ কিলোমিটার। কিন্তু রিজওয়ান জানেন আদতে কতটা বিপজ্জনক ডেলিভারি ছিল!

এরপর লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে রান বাড়ানোর লড়াই চালিয়ে যান সালমান। ৯ রানে জীবন পাওয়া খুররাম শাহজাদকে ১২ রানে বিদায় করেন মিরাজ। ২ রানে সাকিবের বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যায় মোহাম্মদ আলিকে একটু পরই আউট করে দেন মিরাজ।

৮০ ওভার শেষে দ্বিতীয় নতুন বল নেয়নি বাংলাদেশ। তাসকিনের দুটি শর্ট বলকে ছক্কায় পরিণত করেন সালমান। ৪৬ রানে তিনি ব্যাট-প্যাড ক্যাচ হলেও আউট দেননি আম্পায়ার। বাংলাদেশের রিভিউ বাকি ছিল না। শেষ পর্যন্ত তাসকিনের শর্ট বলেই আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় তার ইনিংস থামে ৫৪ রানে।

পরের ওভারেই আবরার আহমেদকে ফিরিয়ে নিজের ৫ উইকেট পূর্ণ করার পাশাপাশি পাকিস্তানের ইনিংস শেষ করেন মিরাজ।

ইনিংসে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি দশমবার, দেশের বাইরে তৃতীয়বার।

বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই রক্ষা পায় বড় বিপদ থেকে। একাদশে ফেরা বাঁহাতি পেসার মির হামজার বলে বেঁচে যান সাদমান ইসলাম। পঞ্চম স্লিপে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি সাউদ শাকিল। শেষ বিকেলের দুটি ওভারে আর বিপদ হয়নি।

বাংলাদেশের জন্য একটি অস্বস্তির খবর অবশ্য আছে। ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। দিনের শেষেও টিভি পর্দায় দেখা গেছে, ড্রেসিং রুমের ভেতর কাঁধে হাত রেখে শুয়ে আছেন তিনি।


সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৮৫.১ ওভারে ২৭৪ (শাফিক ০, সাইম ৫৮, মাসুদ ৫৭, বাবর ৩১, শাকিল ১৬, রিজওয়ান ২৯, সালমান ৫৪, শাহজাদ ১২, আলি ২, আবরার ৯, হামজা ০*; তাসকিন ১৭-২-৫৭-৩, হাসান ১৪-১-৬০-০, নাহিদ ১৫-১-৫৮-১, মিরাজ ২২.১-২-৬১-৫, সাকিব ১৭-৩-৩৪-১)।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২ ওভারে ১০/০


National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.