ফাইল ফটো
দেশের আকাশে ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে। সেই হিসেবে শবে বরাত পালিত হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে।
রোববার সন্ধ্যায় (বাদ মাগরিব) বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ. আউয়াল হাওলাদার।
সংবাদ সম্মেলনে আ. আউয়াল হাওলাদার জানান, বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল ১২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) থেকে পবিত্র শাবান মাস গণনা শুরু হবে। আর ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে।
শবে বরাতের পরদিন বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি। এবার এ ছুটি পড়ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার)।
সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায়— আজ ২৯ রজব ১৪৪৫ হিজরি, ২৮ মাঘ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রি. রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। তাই আগামীকাল ২৯ মাঘ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রি. সোমবার থেকে ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র শাবান মাস গণনা শুরু হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী ১৪ শাবান ১৪৪৫ হিজরি, ১২ ফাল্গুন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রি. রোববার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমীন, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিনুর রহমান, উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মুন্সী জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) মো. রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের সহকারী প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কাসেম, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান প্রমুখ।
শাবান মাসের একটি মর্যাদাপূর্ণ রাতের নাম শবে বরাত। হাদিসের ভাষায় ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ১৫ শাবানের রাত। ‘শবে বরাত’ ফারসি শব্দ। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত, ‘বরাত’ অর্থ নাজাত বা মুক্তি। এই দুই শব্দ মিলে অর্থ হয় মুক্তির রজনী।
এই রাত নিঃসন্দেহে ফজিলতপূর্ণ। এ নিয়ে যেমন বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়, তেমনিভাবে এই রাতের ফজিলতও অনস্বীকার্য। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন। সেই রাতে তিনি মুশরিক এবং অন্য ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।’ (মুসনাদে বাজজার: ৮০, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬৬৪৬)
আরেক হাদিসে আলি ইবনে আবু তালিব রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'যখন মধ্য শাবানের রাত আসে, তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো এবং দিনে রোজা রাখো। কেননা এদিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিজিকপ্রার্থী? আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো রোগমুক্তি চাও? আমি তাকে সুস্থতা দেব। কে আছো এই এই চাও?' এভাবে ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। (সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৬২)
এ রাতে আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের গোনাহসমূহের ক্ষমা চেয়ে, তাওবা করে গোনাহ মুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। এ রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত, কুরআন তেলাওয়াত, কাজা নামাজসমূহ আদায়সহ অন্যান্য জিকির-আজকার করা যেতে পারে। আল্লাহর বিশেষ এ নিয়ামত যেন আমাদের থেকে এমনি এমনি হাতছাড়া না হয়ে যায়।
বিষয় : শবে বরাত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh