বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত সংকটময় থাকায় তাঁকে এই মুহূর্তে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার মতো শারীরিক পরিস্থিতি নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা যদি আল্লাহর রহমতে 'স্থিতিশীল' হয়, তবে দ্রুত তাঁকে বিদেশ নেওয়া হবে।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন।

চিকিৎসকদের মতামত ও সংকটাপন্ন পরিস্থিতি

মির্জা ফখরুল জানান, বেগম খালেদা জিয়া গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা কিছুটা সংকটাপন্ন। দেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও আমেরিকার জন হপকিন্স এবং লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ভার্চ্যুয়ালি তাঁর চিকিৎসা তদারকি করছেন।

বিএনপি মহাসচিব জানান, শুক্রবার রাতে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে একটি সভা করেছে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে মতামত দিয়েছেন। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু বর্তমানে তাঁর যে শারীরিক অবস্থা, তাতে তাঁকে দীর্ঘ ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

যদিও বর্তমান অবস্থায় তাঁকে বিদেশ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তবুও পরিবার ও দল বিদেশ নেওয়ার সব প্রস্তুতি এগিয়ে রাখছে। মির্জা ফখরুল বলেন:

অর্থাৎ, যদি চিকিৎসকেরা 'সি ইজ রেডি টু ফ্লাই' (বিমানে ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত) বলে মতামত দেন, তবে খুব দ্রুত তাঁকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।

৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত রোববার রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে পরীক্ষায় বুকে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।