× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গণতন্ত্রে ফেরাই প্রধান চ্যালেঞ্জ, দেশ ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছে: মির্জা ফখরুল

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:১০ পিএম । আপডেটঃ ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৪১ পিএম

বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে 'ট্রানজিশনাল পিরিয়ড' বা ক্রান্তিকাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, আসন্ন নির্বাচন কোনো শেষ লক্ষ্য নয়, বরং দেশকে গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনা এবং একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে 'চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বিএনপি ও ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার। অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বর্তমান রাজনৈতিক দোলাচলের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আজকে আমরা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি। একটা দোলাচল চলছে। নির্বাচনের সময় ঘোষণা হয়েছে। এখনো শিডিউল হয়নি, হবে আশা করছি। নির্বাচন কিন্তু সব শেষ নয়। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা ডেমোক্রেসিতে ফিরে যাওয়া এবং ডেমোক্রেটিক কালচার গড়ে তোলা—এটাই সবচেয়ে বড় অভাব এবং প্রধান চ্যালেঞ্জ।”

মির্জা ফখরুল মনে করেন, একটি টেকসই রাষ্ট্রকাঠামো নিশ্চিত করতে হলে বিচার বিভাগ, সংসদ, গণমাধ্যম ও প্রশাসনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে হবে।

বিগত ১৬ বছরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হওয়া দমন-পীড়ন, গুম, খুন ও মিথ্যা মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোনো লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ওপর এত অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে কিনা, তা তার জানা নেই। তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান:

  • ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে।
  • ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন।

তিনি বলেন, এসব ঘটনা ইতিহাসে ও ডকুমেন্টারিতে আনতে হবে। ঘটনাগুলো গবেষণার মাধ্যমে নথিভুক্ত করতে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিএনপি বিপ্লবী দল নয়, বরং লিবারেল ডেমোক্র্যাট হিসেবে দলটির অবস্থান পরিষ্কার করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা সব ধর্ম-বর্ণ-মতের মানুষকে নিয়ে একটি 'রেইনবো স্টেট' গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

সংস্কার নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি এই দাবি অনেক আগেই তুলেছিল। সংস্কারের দাবিকে কেউ যদি ব্যক্তিগত অর্জন হিসেবে উপস্থাপন করেন, তবে তা সংকীর্ণতা হবে।

দেশে একদিকে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে 'মবক্রেসি ভায়োলেন্স' চলছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি মনে করেন, এই রায়ের গুরুত্ব কমিয়ে দিতে একটি বিশেষ মহল বিশ্বদৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য সচেতনভাবে ও ধূর্ততার সঙ্গে কাজ করছে। তিনি সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার এবং কোনো মহল বিভক্তি সৃষ্টি করছে কি না, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান।

দেশের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকটের মূল কারণ হিসেবে গণতন্ত্রের বাস্তব চর্চার অভাবকে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি গণতন্ত্রের মূল কথাটা স্মরণ করিয়ে দেন: “আমি তোমার সঙ্গে একমত না হতে পারি, কিন্তু তোমার মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব।” দুর্ভাগ্যক্রমে এখানে অনেকে অন্যের মতকে সহ্য করতে চান না।

তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট্ট বিবৃতিকে দল ও জাতির জন্য পথনির্দেশনা হিসেবে তুলে ধরেন—"প্রতিশোধ নয় প্রতিহিংসা নয়, আসুন আমরা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে সবাই একযোগে কাজ করি।" বিদেশে থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণকে সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জিয়া পরিষদ নেতা অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এবং ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের সম্পাদক বাবুল তালুকদার। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.