ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন বানচালে 'ছোট নয়, বড় শক্তি'র চেষ্টা দেখছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যত ঝড়ঝঞ্ঝাই আসুক না কেন, তা অতিক্রম করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে শারীরিক আক্রমণসহ সাইবার হামলা বা অপতথ্য ছড়ানো নিয়েও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে সভার আলোচ্য বিষয়গুলো জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, 'নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে বানচালের চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ঝঞ্ঝাই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।'
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এই আক্রমণ বলতে শুধু শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং সাইবার অ্যাটাক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অপতথ্য (ডিজ-ইনফরমেশন) ছড়ানোকেও বোঝানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, 'যারা পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসর, তারা দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, তা চাইবে না। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।'
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলো হলো:
প্রেস সচিব জানান, মাঠ প্রশাসনে, বিশেষ করে ডিসি, এডিসি, ইউএনওসহ বিচারিক দায়িত্বে এমন কাউকে পদায়ন করা হবে না, যিনি গত তিনটি নির্বাচনী কাজে যুক্ত ছিলেন, এমনকি ন্যূনতম ভূমিকা থাকলেও তাকে দায়িত্বে রাখা হবে না।
পদায়নের ক্ষেত্রে কর্মকর্তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, শারীরিক যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা এবং গণমাধ্যমে অনিয়মের প্রতিবেদন হয়েছে কি না, তা দেখা হবে। সবচেয়ে ফিট কর্মকর্তাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পদায়ন করা হবে। তবে:
আগামী ১ নভেম্বর থেকে মাঠ প্রশাসনের পদায়নের এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন যে পুলিশের পদায়নের বিষয়েও একইভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ৬৪ জেলার এসপিদের তালিকা করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনায় সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ৯০ হাজার সেনাসদস্য মাঠে থাকবেন এবং বাকি ২ হাজার নৌবাহিনীর সদস্য থাকবেন। প্রতিটি জেলায় এক কোম্পানি সেনা থাকবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে ও পরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য ও ভুয়া তথ্যের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনে এগুলো মোকাবিলায় দুটি কমিটি গঠনের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। দুটি কমিটিই উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কাজ করবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ছড়িয়ে পড়া অপতথ্য বা ভুয়া তথ্যের ফ্যাক্ট যাচাই করে তা প্রকাশ করবে। এ জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা হবে।
কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ (ট্রেনিং) নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। বিশেষ করে আনসার সদস্যদের প্রশিক্ষণ আরও কার্যকর করার এবং বডি ওর্ন ক্যামেরা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণসংক্রান্ত ভিডিও ও উপকরণগুলো যেন ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট, টিভি বা বিটিভিতে আসে, সে বিষয়ে দ্রুত কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। সংসদ অধিবেশন না থাকায় এখন সংসদ টেলিভিশন ব্যবহৃত হচ্ছে না, তাই নির্বাচন কমিশন সংসদ টিভিকে ব্যবহার করে নির্বাচনসম্পর্কিত যাবতীয় প্রচার করতে চাইছে।
নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তারিখ জানাবে।
নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে, এত আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব আশ্বাস দেন, ‘আতঙ্কের কিছু নাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওয়ান অব দ্য বেস্ট ইলেকশন হবে।’
বিষয় : চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
