× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জুলাই জাতীয় সনদ

আগামীকাল দক্ষিণ প্লাজায় সই, কী আছে রাষ্ট্রের সংস্কারের এই মহাপরিকল্পনায়?

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০:১৩ এএম । আপডেটঃ ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৯ এএম

আট মাসের আলোচনা শেষে চূড়ান্ত হওয়া এই ঐতিহাসিক দলিলটি আগামীকাল স্বাক্ষরিত হবে। ফাইল ছবি

দেশের রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে যাচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত 'জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫'। প্রায় আট মাস ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তিন ধাপে আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রস্তুত হওয়া এই সনদ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে কাঠামোগত সংস্কারের পথে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দুজন করে প্রতিনিধি এই সনদে স্বাক্ষর করবেন।

গত বছর আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন—এই ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনগুলোর সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে পরবর্তীতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে।


  • প্রথম পর্ব: ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা হয়।
  • দ্বিতীয় পর্ব: ৩০টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।


গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এই দুই পর্বের বিস্তৃত আলোচনায় মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠায়। পরবর্তীতে খসড়ার ত্রুটি সংশোধন করে নির্ভুল কপি পাঠানো হয়। ২০ আগস্ট, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত খসড়ার ওপর যেকোনো মতামত দেওয়ার জন্য সময় বৃদ্ধি করা হয়।

সব দলের মতামত পর্যালোচনা এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পর গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সনদের চূড়ান্ত কপি সব রাজনৈতিক দলের কাছে হস্তান্তর করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই সনদে মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোট অংশগ্রহণের মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

জুলাই জাতীয় সনদে মূলত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গণতান্ত্রিক ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সনদে সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যের ঘোষণা রয়েছে।


সনদের প্রধান অঙ্গীকারসমূহের মধ্যে রয়েছে:

১. পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন: জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। ২. সাংবিধানিক সুরক্ষা: সনদের পূর্ণাঙ্গ বিষয়বস্তু সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা যথোপযুক্তভাবে সংযুক্ত করা এবং সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

৩. ঐতিহাসিক স্বীকৃতি: গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা। ৪. বিচার ও সহায়তা: গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের বিচার, শহীদ পরিবারকে সহায়তা, আহতদের সুচিকিৎসা এবং গুম-খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা। ৫. আইনি সংস্কার: সনদে লিপিবদ্ধ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান এবং বিদ্যমান আইনসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন বা নতুন আইন প্রণয়ন করা।

৬. দ্রুত বাস্তবায়ন: অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সিদ্ধান্তগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ ছাড়াই দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়ন করা।

এই সনদ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থায় কাঠামোগত পরিবর্তন ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই ভিত্তি তৈরি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.