ছবি: সংগৃহীত
সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে গণভোট আয়োজনের দাবি তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির নেতারা বলেন, জনগণ পিআরের পক্ষে থাকলে সবাইকে তা মেনে নিতে হবে, আর বিপক্ষে গেলে জামায়াতও তা মেনে নেবে।
'জুলাই সনদের' পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। কিন্তু একটি মহল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট করছে।
তিনি বলেন, "জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে এবং এর ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। যারা বলছেন, পরের নির্বাচিত সরকার সংবিধান সংস্কার করবে—এটা গণআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।"
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে পরওয়ার বলেন, "যদি এখন সংস্কার করা না হয়, তাহলে দেশ মহাদুর্যোগের দিকে পড়তে পারে। যারা বলছেন, আমরা ক্ষমতায় গিয়ে সব মুছে দেব, তাদের এই কথায় দুরভিসন্ধি আছে। তাই এই অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া এবং গণভোটের আয়োজন করাই উপযুক্ত সময়।"
পরওয়ার আরও বলেন, "যদি বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে নির্বাচন হয়, তাহলে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে, আরেকটি হাসিনার জন্ম হবে। বাংলার মানুষ আর কোনো ফ্যাসিবাদ জন্ম হতে দেবে না।"
‘গণভোট দিতে কেন ভয়?’
পিআর পদ্ধতি না দিলে আরেকটি ফ্যাসিবাদী সরকার হবে মন্তব্য করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, "জরিপে দেখা গেছে ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে। কমিশনকে ৩১টি দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআরের পক্ষে মত দিয়েছে।"
তিনি বলেন, "আমরা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, আপনারা গণভোট দিন। জনগণ যদি পিআরের পক্ষে থাকে, আপনাদেরকেও তা মানতে হবে। আর যদি বিপক্ষে যায়, আমরা জামায়াতও তা মেনে নেব। তাহলে কেন আপনারা গণভোটকে ভয় পাচ্ছেন?"
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, "জাতি অর্থবহ সংস্কার আশা করেছিল। কিন্তু সরকার তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।"
আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, সরকার একটি নির্দিষ্ট দলের পকেটে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "যে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদমুক্ত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে, সেই বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে যারা ষড়যন্ত্র করবে, জনগণ তাদের প্রতিরোধ করবে।"
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "একটি শ্রেণি 'আওয়ামী স্টাইলের' নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখছে। জনগণের ভোট ডাকাতির কোনো নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবে না।"
মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল এবং সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় নেতাকর্মীদের "এই মুহূর্তে দরকার, পিআর আর সংস্কার" এবং "পিআর পদ্ধতির নির্বাচন, দিতে হবে দিয়ে দাও" স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিষয় : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh