চলমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কীভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করবে, তা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী শঙ্কা প্রকাশ করেছে। দলটি বলছে, একটি চাঁদাবাজ চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা এই সরকারের পক্ষে এত বড় একটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা কঠিন।

আজ রোববার (৩১ আগস্ট ) বিকেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর বাসভবন যমুনায় (সাবেক রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন) বৈঠক করে জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, "আগে একদল বাসস্ট্যান্ড দখলে নিত, এখন আরেক দল নিয়েছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।"

নির্বাচনের রোডম্যাপ ও নীলনকশা

সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, "প্রধান উপদেষ্টা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলেছেন। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত, তবে কার্যকারিতা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছি।" তিনি আরও বলেন, দেশ একটি নীলনকশার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

তাহেরের মতে, লন্ডনে একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এতে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং একটি নির্দিষ্ট দলকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের (৫ আগস্ট) দিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা কোনো চাপ থেকে করা হয়েছে। সরকারের উচিত ছিল প্রথমে জুলাই সনদ নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া, তারপর নির্বাচনের রোডম্যাপ ও তারিখ ঘোষণা করা।

জামায়াতের প্রতিনিধিদল ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

জামায়াতের প্রতিনিধিদলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ছাড়াও ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এবং হামিদুর রহমান আযাদ।

বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।

জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, আওয়ামী লীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) সহযোগী হিসেবে জাতীয় পার্টি কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জাতীয় পার্টির বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা তাঁরা বলেছেন। একই সঙ্গে, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনার গভীরে গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সরকারকে অনুরোধ করেছে জামায়াত।