ছবি: সংগৃহীত
গত বছর থেকেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে আলোচনার বড় একটি ইস্যু হয়ে উঠেছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তাকে দাবিয়ে রাখতে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদক্ষেপ।
বর্তমানে এমন অবস্থা হয়েছে, ইমরানকে সামাল দিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনী নিজেই বেসামাল হয়ে পড়েছে।
বিগত কয়েক দশক ধরেই পাকিস্তানে রাজত্ব করে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী। সরকারের পেছনে কলকাঠি নাড়া, প্রয়োজনে সরকারের পতন ঘটানো, এসবের জন্য বাহিনীটির কুখ্যাতি আছে বটে। তবে অনেক পাকিস্তানি নাগরিক এতেই খুশি।
তারা মনে করেন, অকর্মণ্য রাজনীতিবিদদের চেয়ে বরং সেনারা দেশটা সামলাতে পারবে ভালোভাবে। কিন্তু ইমরান ইস্যুতে বর্তমানে সোনাকর্তাদের জনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে কমে এসেছে।
রাষ্ট্র চালনায় প্রভাব রাখার চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী- এমন অভিযোগ করেছিলেন দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। বর্তমানে তিনি জেলে আছেন।
এরপর দেশটির জাতীয় নির্বাচনে ইমরান খানের দল বেশি আসন পেলেও তাদেরকে ক্ষমতায় যেতে দেওয়া হয়নি। সেনাবাহিনীর সমর্থনে অন্যদের হাতে চলে যায় সরকার।
এমন অবস্থায় অনেকটা জনপ্রিয়তা খুইয়েছে সেনাবাহিনী। একদল মানুষ এখনো সেনাবাহিনীর পক্ষে রইলেও আরেকদল তাদের বিপক্ষে চলে গেছে।
পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের বিপদ এখানেই শেষ নয়। এহেন বিভক্তি তার নিজের সেনাবাহিনীর মধ্যেও দেখা যাচ্ছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে এমন অনেকেই আছেন যারা ইমরান খানের প্রতি অনুরক্ত। ইমরান খানের মার্কিনবিরোধী, চীন-রাশিয়াপন্থী, ডানপন্থি নীতির শক্ত সমর্থক তারা। সেনাবাহিনীর এই আভ্যন্তরীণ ফাটল মেরামত করতে পারাটা সেনাপ্রধানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এখন। পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ পন্থা এবং স্থিতিশীলতা দুটোই এর অপর নির্ভর করছে এখন।
সেনাবাহিনীতে এমন বিভক্তি খুবই খারাপ সময়ে দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের অর্থনীতির মরো-মরো দশা হয়েছে। ইমরান খান ক্ষমতা থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের। তা মেরামতের চেষ্টা করে চলেছেন জেনারেল মুনির। একদিকে নরেন্দ্র মোদির ভারত, আরেকদিকে তালেবান শাসিত আফগানিস্তান, আরেকদিকে ইরান— সবদিক দিয়েই চাপে আছে পাকিস্তান।
তবে এমন প্রতিকূল অবস্থার পেছনে সেনাবাহিনী নিজেই অনেকটা দায়ী। জেনারেল পারভেজ মোশাররফের শাসনের পর ধীরে ধীরে গণতন্ত্রে ফেরার চেষ্টা করে পাকিস্তান। সে সময়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ— নওয়াজ এবং পাকিস্তান পিপল'স পার্টি এই দুই দল সেনাবাহিনীর ক্ষমতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে, এমন ভয় পেয়েছিলেন সেনা কর্মকর্তারা।
এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরোধিতা করছে, এমন একটি মতবাদও ছড়ায় সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই। এমন সময়ে নিজেদের চামড়া বাঁচাতে তারা ইমরান খানের সাথে জোট বাঁধে।
সাবেক ক্রিকেটার, পারভেজ মোশাররফের সমর্থক, এবং পাকিস্তানের বনেদি রাজনৈতিক পরিবারগুলোর কট্টর সমালোচক ইমরান খানকে পাশে পেয়ে স্বস্ত্বির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন সেনা কর্মকর্তারা।
বিষয় : পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh