× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সচিব সভা

দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা যেন পদায়ন না পান

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

০৪ জুলাই ২০২৪, ১৩:৪৩ পিএম । আপডেটঃ ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৪:০১ পিএম

বাংলাদেশ সচিবালয়| ফাইল ছবি

অনেক সময় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও পদোন্নতি ও ভালো জায়গায় পদায়ন পেয়ে যান। এটা যেন কোনোভাবেই না হতে পারে সে জন্য সচিবসহ দপ্তর প্রধানদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্র সাধন করতে হবে। কেনাকাটার ক্ষেত্রে পণ্য দেশে আনার আগে তা দেখতে বিদেশে যাওয়া যাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় এসব বিষয় আলোচনা ও নির্দেশনা দেওয়া হয়। সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সুশাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। দুর্নীতিবিরোধী মনোভাবও প্রকাশ পায়।

সচিব সভা সরকারের সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বছরে খুব কম সময়ে এই সভা হয়। কখনো কখনো প্রধানমন্ত্রী এই সভায় উপস্থিত থাকেন। তবে বেশির ভাগ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজকের সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন সভাপতিত্ব করেন। এতে সরকারের প্রায় সব সচিব উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে এ বছর দুবার সচিব সভা অনুষ্ঠিত হলো। গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

এবার এমন সময়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হলো, যখন পুলিশ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বিপুল সম্পদ অর্জনের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। আজকের বৈঠকে কারও নাম সরাসরি উল্লেখ না করলেও সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, যেসব কর্মকর্তা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নামে-বেনামে অভিযোগ এলেও খুব একটা আমলে নেওয়া হয় না। যেসব অভিযোগ আসে, তা আমলে নিয়ে তদন্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আরেক জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, দুর্নীতি সবাই করে না। অল্প কয়েকজন দুর্নীতি করেন, দায় পড়ে সবার ওপর। এ বিষয়ে যার যার জায়গা থেকে শক্ত ভূমিকা রাখায় গুরুত্ব দেন তিনি।

পণ্য দেখতে বিদেশ ভ্রমণ নয়

বর্তমানে অনেক সময় দেখা যায়, কোনো কিছু কেনাকাটার জন্য সংশ্লিষ্ট পণ্য দেশে আনার আগে সেগুলো দেখতে (প্রি–শিপমেন্ট ইন্সপেকশন) কিছু কর্মকর্তা বিদেশে যাচ্ছেন। এ নিয়ে সমালোচনাও আছে। সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, এমন কাজে বিদেশে যাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে মালামাল দেশে আসার পর তা ঠিক আছে কি না, সেটি দেখার সুযোগ রাখা যেতে পারে।

সভায় জানানো হয়, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ সংশোধন করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রমতে, প্রস্তাবিত বিধিতেও সরকারি কর্মচারীদের সম্পত্তির ঘোষণা দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বিধি অনুযায়ী চাকরিতে যোগদানের পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত সময়ে কর্মচারীকে নিজের এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির ঘোষণা দিতে হবে।

তবে প্রস্তাবিত বিধিমালাটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি এটি সংশোধন করা হবে। এ বিষয়ে সচিবসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিধিমালা দ্রুত যুগোপযোগী করে চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে প্রবেশের সময় স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা দিতে হয়। এরপর পাঁচ বছর অন্তর সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধির বিবরণী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে জমা দেওয়ার নিয়ম। দুর্নীতি রোধ এবং চাকরিজীবীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এমন নিয়ম থাকলেও তা ঠিকমতো মানা হয় না।

বিষয়টি আদালতে গড়ালে সরকারি কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সম্পদ বিবরণীর ঘোষণা এবং সময়ে সময়ে তা দাখিল-সংক্রান্ত বিধি কঠোরভাবে মানতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সম্প্রতি হাইকোর্টের ওই আদেশে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তার অগ্রগতি জানিয়ে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সচিবসভায় উপস্থিত একজন সচিব সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু আদালতের আদেশ আছে; সুতরাং সম্পত্তির ঘোষণা করতে হবে। এটি বিদ্যমান আইনেও আছে।

যুগোপযোগী হচ্ছে শুদ্ধাচার কৌশল

সচিবালয়ে বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় সন্ধ্যায়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, সভায় শুদ্ধাচার বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বাজেট বাস্তবায়ন এবং নির্বাচনী ইশতেহার নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কিছু দাপ্তরিক কাজে প্রধানমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো যেন যত্ন সহকারে গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করা হয়, সে ব্যাপারে সভায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যে শুদ্ধাচার কৌশলটি আছে, সেটি প্রায় ১২ বছর হয়ে গেছে। এটি এখন যুগোপযোগী করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। সে প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার কথা বলা হয়েছে। অধস্তন যে অফিসগুলো আছে, যেখান থেকে মানুষকে সেবা দেওয়া হয়, সেই সেবা যেন ঠিকমতো দেওয়া হয়। সেই কাজটা যেন জোরালোভাবে তদারক করা হয়। মানুষের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলো যেন খুব গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.