বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থার সম্মেলন কক্ষে ‘ডিএনএ ফরেনসিক সাইন্স: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’-শীর্ষক সেমিনার। ছবি: সংগৃহীত
ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এএম পারভেজ রহিম জানিয়েছেন মাত্র তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে চলছে ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কার্যক্রম। বিভিন্ন মামলার আলামতসহ ডিএনএ ল্যাবে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ স্যাম্পল (নমুনা) জমা হচ্ছে, যা রাখার পর্যাপ্ত স্থান নেই। স্থায়ী কার্যালয়ের সংস্থান না হলে ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ‘ডিএনএ ফরেনসিক সাইন্স: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’-শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে এসব কথা জানান তিনি।
রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থার সম্মেলন কক্ষে ডিএনএ দিবস পালন উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাদের কার্যক্রম পরিচালনার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্থান সংকট এবং জনবল সংকটের কারণে অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন ডিএনএ পরীক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সীমিত লোকবল দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)। তিনি বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে ভূমিমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
সিমিন হোসেন রিমি আরো বলেন, ভাড়া করা ফ্লোরে কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়। ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপরাধীকে ধরা ছেড়ে দেওয়া ছাড়াও মানুষের অসুখ বিসুখ নির্ণয় বা নির্মূলের ক্ষেত্রেও এটা গুরুত্বপূর্ণ। দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা, মিথ্যা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া, মামলার প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে এবং বিচারোত্তর সত্য উদ্ঘাটনে ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ডিএনএ ল্যাবরেটরিকে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে পরিণত করা হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব নাজমা মোবারেক। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটনসহ ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
বক্তারা বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে অপরাধ বিজ্ঞান ও অপরাধমূলক বিচার ব্যবস্থায় ডিএনএ প্রযুক্তি বা ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট একটি যুগান্তকারী সংযোজন। এটি বিচার ব্যবস্থাকে একটি নতুন যুগে উত্তরণ ঘটিয়েছে। হত্যা বা ধর্ষণের মতো সহিংস অপরাধ দমন, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব নির্ণয়, মৃত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ধার, কিডনি দাতা-গ্রহীতার সম্পর্ক নির্ণয়, প্রবাসীদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়, নারী পাচার ও অবৈধ অভিবাসী প্রতিরোধে ডিএনএ পরীক্ষাসহ প্রবাসী শ্রমিকদের লাশ দেশে আনার ক্ষেত্রে ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। দেশব্যাপী এই সুবিধা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে স্ক্রিনিং সুবিধা সম্পন্ন আটটি বিভাগীয় শহরে আটটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন হয়েছে। যেখান থেকে স্ক্রিনিং করা আলামত পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশে ডিএনএ প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার নিশ্চিত করা লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪ পাস করা হয় এবং ২০১৮ সালে ডিএনএ বিধিমালা, ২০১৮ পাস করা হয়েছে। ডিএনএ আইন ২০১৪ এর ২০ (১) ধারা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৯ আগস্ট ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh