সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানে চীনের সহায়তা চেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সমাধানের অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশ এখন রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে খুবই চিন্তিত। কারণ এরই মধ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার ছয় বছর পার হয়ে গেছে।’
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও সোমবার প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় তিনি এই সহায়তা কামনা করেন।
সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন, এটা (রোহিঙ্গা সংকট) আমাদের জন্য খুবই হতাশা ও উদ্বেগজনক।
প্রধানমন্ত্রী চীনের মন্ত্রীকে বলেন, ‘এটি রোহিঙ্গা সংকটের সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের জন্য আমার (প্রধানমন্ত্রীর) পক্ষ থেকে চীনের প্রেসিডেন্টকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ বার্তা।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চীনের মন্ত্রীকে তার নিজের পক্ষ থেকে এবং বাড়তি আগ্রহ নিয়ে কিছু করারও অনুরোধ করেন।’
লিউ জিয়ানচাও বলেন, চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে কীভাবে পরিস্থিতির উন্নতি করা যায় তা খুঁজে বের করতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুটি জটিল এবং সেখানে অভ্যন্তরীণভাবে তা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘এমনকি, মিয়ানমার সরকারেরও (এই ইস্যুটি সম্পর্কে) কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মতো অবস্থান নেই। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে (সেখানে) গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি একটি জটিল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, চীন বুঝতে পেরেছে যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক উপায়ে সহায়তা করছে বলে তার দেশ অত্যন্ত প্রশংসা করে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত এই পররাষ্ট্রনীতির প্রতি তার দেশ দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, তাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র হলো দেশের গণমানুষের উন্নয়ন ও মানোন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
আগামী মাসে শেখ হাসিনার চীন সফর প্রসঙ্গে লিউ জিয়ানচাও বলেন, এতে দুই দেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্ব আরও জোরদার হবে। এই সফর আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।
বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে অভিভূত হয়েছেন উল্লেখ করে চীনের মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী।
বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে চীনের অর্থনৈতিক অবস্থাও মন্থর।
তিনি উল্লেখ করেন যে গত বছর চীনের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.২ শতাংশ এবং চলমান অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের আরও কাজ করতে হবে এবং বাংলাদেশকেও করতে হবে।
লিউ জিয়ানচাও বলেন, উন্নয়নের এক পর্যায়ে চীনের অর্থনীতি মন্থর ছিল, কিন্তু প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান সে সময়ে সে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এতটা উন্নত ছিল না।তিনি বলেন, ‘আমরা একটু বেশিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা আমাদের পক্ষে কঠিন ছিল। কিন্তু সৌভাগ্যবশত বাংলাদেশ স্মার্ট প্রযুক্তি, এআই ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।’
পার্টি টু পার্টি (চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও আওয়ামী লীগ) সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ। চীনা মন্ত্রী অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও পার্টি টু পার্টি সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন।
অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এসময় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিষয় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন রোহিঙ্গা সংকট
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh