× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

২৬ জনকে ফাঁসি দেওয়া ‘জল্লাদ’ শাহজাহান মারা গেছেন

ন্যাশনাল ট্রিবিউন রিপোর্ট

২৪ জুন ২০২৪, ০৮:১৩ এএম । আপডেটঃ ২৪ জুন ২০২৪, ০৮:১৪ এএম

জল্লাদ শাহজাহান। ছবি: সংগৃহীত

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ ২৬ জনের ফাঁসির দড়ি টানা আলোচিত সেই ‘জল্লাদ’ শাহজাহান মারা গেছেন। সোমবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

গতকাল রোববার গভীর রাতে সাভারের হেমায়েতপুরের একটি বাসা থেকে শাহজাহানকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আজ সোমবার ভোরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহজাহানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মশিউল আজম ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, শাহজাহান ১০ জুন সাভারের হেমায়েতপুরে বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানে থাকতে শুরু করেছিলেন। গতকাল রাত তিনটার দিকে বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান।

পুলিশ কর্মকর্তা মশিউল আজম বলেন, শাহজাহানের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন শাহজাহান ভূঁইয়া। একটি ডাকাতি করতে গিয়ে হত্যা মামলা এবং আরেকটি অস্ত্র আইনে মামলা। এই দুই মামলায় ১৯৯১ সালের ১৭ মে থেকে কারাগারে ছিলেন শাহজাহান। দুই মামলায় তার সাজা হয়েছিল ৪২ বছর। ফাঁসি কার্যকর ও অন্যান্য কারণে তার সাজার মেয়াদ কমিয়ে ৩২ বছর করা হয়েছিল। ওই সাজা শেষ হওয়ার পর গত বছরের ১৮ জুন শাহজাহান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। ৪২ বছরের সাজার মধ্যে প্রতি ফাঁসির জন্য দুই মাস কারা রেয়াত পেয়েছিলেন শাহজাহান।

কারাবিধি অনুযায়ী, আচার-আচরণ ও অন্যান্য কারণে সব মিলিয়ে ১০ বছর ৫ মাস রেয়াত পেয়েছেন শাহজাহান। সাজা খেটেছেন ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন। শাহজাহানের হাতে কোনো টাকাপয়সা না থাকায় যে ১০ হাজার টাকা তার দণ্ড হয়েছিল, তা কারা কর্তৃপক্ষ মিটিয়ে দিয়েছে।

কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন শাহজাহান। তবে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ৬০ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি করেছিলেন।

মুক্তি পাওয়ার পর শাহজাহান ভূঁইয়া বলেছিলেন, তার থাকার কোনো জায়গা নেই। বাড়িঘর কিছুই নেই। তাই সরকারের কাছে একটা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন শাহজাহান। তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেছিলেন যে প্রধান জল্লাদ হওয়ার পর প্রথম ফাঁসি দেন আলোচিত একটি হত্যা মামলার আসামি হাসানকে। একটি ফাঁসি দিতে প্রধান জল্লাদের সঙ্গে ছয়জন সহযোগী লাগে এবং ফাঁসির রায় কার্যকর করলে প্রত্যেক জল্লাদের দুই মাস চার দিন কারাদণ্ড মওকুফ হয় বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া কারাগারে যাঁরা জল্লাদ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শাহজাহান তাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন।

শাহজাহান ভূঁইয়া ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কারাগারের নথি অনুসারে ১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির জন্য ১২ বছর এবং ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অপর একটি মামলায় ডাকাতি ও হত্যার জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। এছাড়া উভয় রায়ে তাকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.