সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার কমিশন অভিযোগটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। এ নিয়ে দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের মধ্যে আলোচনাও হয়। দুদক সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, অভিযোগটি কমিশন পর্যালোচনা করেছে। এটি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে যাচাই-বাছাই করার জন্য কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটিতে (যাবাক) পাঠানো হয়েছে। এ কাজ শেষে কমিটি একটি প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপন করবে। পরে কমিশনের প্রতিবেদনের আলোকে অভিযোগটি অনুসন্ধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
‘তাৎপর্যপূর্ণ দুর্নীতিতে’ জড়িত থাকার অভিযোগে জেনারেল আজিজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর গত ২০ মে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি ওঠে নানা মহল থেকে। সরকারও দৃশ্যত এতে সায় দিয়েছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল আজিজের অবৈধ সম্পদের তদন্ত চেয়ে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি আবেদন করেন। সেটিই বৃহস্পতিবার কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদনসহ উপস্থাপন করার জন্য যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠায়।
আইনজীবীর আবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগে জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। জাতিসংঘের শান্তি মিশনেও দেশের সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে দারুণভাবে। দেশের সেনাবাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে।
জেনারেল আজিজ ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর সেনাপ্রধান ছিলেন। এর আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
তিনি সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আলজাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি সেনাবাহিনীর কেনাকাটায় তাঁর ভাইদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিপুল দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।
সূত্র জানায়, দুর্নীতি ছাড়াও সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২০১৪ সালে তাঁর ভাই হারিছ আহমেদ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি এনআইডিতে নিজের ছবি পরিবর্তন করেন। আর ওই ছবি পরিবর্তনের সুপারিশ করেছিলেন জেনারেল আজিজ।
জেনারেল আজিজ তাঁর আরেক ভাই তোফায়েল আহমেদ জোসেফের নামে দুটি এনআইডি নিয়েছেন। এর একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে, তানভির আহমেদ তানজীল নামে। অন্যটি নিয়েছিলেন তোফায়েল আহমেদ জোসেফ নামে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি গ্রহণ ও একাধিক এনআইডি নেওয়া আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর পরও ওই দুই সহোদরের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ ছাড়া জেনারেল আজিজ ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁর তিন ভাই খুনের মামলায় দণ্ডিত হন। তবে জেনারেল আজিজ সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
বিষয় : আজিজ দুদক সাবেক সেনাপ্রধান
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh