ছবি: সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে নোয়াখালীতে ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ বিদ্যুৎ লাইন এখনো সচল হয়নি। কেবল জেলা শহর মাইজদীর কিছু কিছু এলাকায় গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে পেরেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)।
এ ছাড়া নয়টি উপজেলার মধ্যে শুধু কবিরহাট উপজেলা সদরের বিদ্যুৎ দিতে পেরেছে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বাকি আট উপজেলার সব কটিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আগামীকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
বিউবোর নোয়াখালী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে জেলা শহর মাইজদীর অনেক জায়গায় বিউবোর বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে গেছে। এতে পুরো শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টা নাগাদ শহরের ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ লাইন চালু করা সম্ভব হয়েছে। বাকি লাইনগুলো সচল করার জন্য বিউবোর কর্মী ও ঠিকাদারের শ্রমিকেরা কাজ করছেন।
এর মধ্যে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সামনের একটি বড় গাছ পাশের ৩৩ কেভি লাইনের ওপর হেলে পড়েছে। সেটি গতকাল রাত পর্যন্ত অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে জজকোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আজ সকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা যায়নি।
ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ লাইন। জেলার নয়টি উপজেলায় সংস্থাটির প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইনই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানান, ঝড়ে বিভিন্ন উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩৯টি খুঁটি ভেঙে পড়ার খবর তাঁরা পেয়েছেন। এ ছাড়া ১৩টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ৬০০টি স্পটে গাছ ও গাছের ডাল ভেঙে পড়ে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইন্সুলেটরসহ অন্যান্য সরঞ্জামের।
চাটখিল উপজেলা সদরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত শনিবার রাত থেকে চাটখিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের সংকটের কারণে এলাকার গ্রাহকেরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় এলাকায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে গেছে। ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে। চার্জ দিতে না পারায় বেশির ভাগ মানুষের মুঠোফোন বন্ধ। কেউ কোথাও জরুরি প্রয়োজনেও যোগাযোগ করতে পারছেন না।
সেনবাগ উপজেলার ইটবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক জামাল হোসেন বলেন, তাঁর বাড়ির আশপাশে বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। দুই দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুতের অভাবে গ্রামে এক ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। আজ সকালে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের দেখেছেন লাইন সচল করার জন্য কাজ করতে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাকির হোসেন বলেন, জেলায় তাঁদের বিদ্যুৎ লাইন সাড়ে ১৫ হাজার কিলোমিটার। ঝড়ে কমবেশি সব লাইনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার রাতে অনেক চেষ্টা করে কবিরহাট উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছেন। এ ছাড়া চাটখিলে একবার চালু করা হলেও পরে তা ট্রিপ করে। রাতে আর চালু করা যায়নি। ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বিদ্যুতের কর্মী ও ঠিকাদারের লোকজন কেউই কাজ করতে পারেননি গতকাল। আজ সকাল থেকে তাঁরা কাজে নেমেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে আজ ও বুধবারের মধ্যে সবগুলো লাইন সচল করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh