কমপক্ষে এক মাস আগে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে (আনার) খুনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি শুরু হয়। এতে জড়িত অন্তত তিনজন ঘটনার ১৩ দিন আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতায় যান। তারও আগে যান দুজন। আনোয়ারুলকে হত্যার জন্যই সেখানে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করা হয়।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, আনোয়ারুলকে খুনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বজনদের বিভ্রান্ত করতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন খুনিরা। তাঁরা আনোয়ারুলের মুঠোফোন নম্বর থেকে একেক সময় একেক ধরনের তথ্য দিতে থাকেন। এমনকি মুঠোফোন নেটওয়ার্কের অবস্থানও পরিবর্তন করতে থাকেন। এ কারণেই নিখোঁজের ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানায়, ভারতের একটি গোয়েন্দা সংস্থা দুই দফায় তাঁর মুঠোফোন নম্বর ভারতের দুটি রাজ্যে সচল হওয়ার তথ্য পেয়েছে।
আনোয়ারুল ১৩ মে রাতে খুন হন। অথচ সেই রাতে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসকে বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, বিশেষ কাজে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে পৌঁছে তিনি ফোন করে গোপাল বিশ্বাসকে জানাবেন, গোপাল বিশ্বাসের ফোন করার দরকার নেই।
এরপর ১৫ মে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২১ মিনিটে আনোয়ারুল আজীমের নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আরেকটি বার্তা আসে। তাতে আনোয়ারুল আজীমের দিল্লি পৌঁছানোর কথা জানিয়ে বলা হয়, ‘আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন, ফোন করার দরকার নেই।’ আনোয়ারুল আজীমের নম্বর থেকে একই বার্তা বাংলাদেশে তাঁর বাড়ির লোকজন এবং ব্যক্তিগত সহকারীকে পাঠানো হয়। এরপর ১৬ মে আনোয়ারুলের নম্বর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফের নম্বরে একটি ফোন আসে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই হত্যার ঘটনা সম্পর্কে গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, কালীগঞ্জের তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের হত্যাকাণ্ডটি পারিবারিক, আর্থিক নাকি অন্য কোনো কারণে, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ডিবি নিবিড়ভাবে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে।