জলদস্যুর কবলে পড়া সেই ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজ নোঙর করেছে শারজার আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে। শুরু হয়েছে জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাসের প্রক্রিয়াও। এর মধ্যে আরব আমিরাতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরীক্ষা করেছে জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের স্বাস্থ্য। সেই পরীক্ষায় ‘পাস’ করেছেন ২৩ নাবিকের সবাই। এটি বড় এক সুখবর বলে জানিয়েছেন আরব আমিরাতে থাকা জাহাজটির মালিকপক্ষের প্রতিনিধি সিইও মেহেরুল করিম।
জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেলে আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে। গতকাল ২২ এপ্রিল এটি নোঙর ফেলে জেটিতে। আগে জাহাজটি ২২ এপ্রিল নোঙর করবে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ। তারা আরও জানিয়েছেন পণ্য খালাসের কার্যক্রম শেষ করার পর শুরু হবে নাবিকদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া। ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত তিনটায় জলদস্যু মুক্ত হয় জাহাজটি। এরপর আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে নাবিকরা।
আরব আমিরাতে থাকা কেএসআরএম গ্রুপের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, ‘নাবিকরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন সবাই। এটা বিরাট এক সুখবর।’
তিনি নাবিকদের খোশমেজাজে থাকার কিছু ছবিও পাঠিয়েছেন আমিরাত থেকে। সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে নাবিকরা কেউ কেউ আড্ডা দিচ্ছেন। কেউ আবার খাবার খাচ্ছেন ডাইনিংয়ে। কেউবা জাহাজের নিরাপত্তা বিষয়ক কাজগুলো মনিটর করছেন। জাহাজ মালিকের কাছে নাবিকদের পাঠানো দৈনন্দিন আপডেট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত নয়দিন ঝুঁকিপূর্ণ চ্যানেলে থাকার সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এতদিন পাহারা দিয়েছিল এমভি আবদুল্লাহকে। এখন নেই সেই পাহাড়াও।
কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত জানান, ঝুঁকিপূর্ণ চ্যানেল থাকায় যাত্রা শুরুর আগে এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে সেই এমভি আবদুল্লাহর। জাহাজের চারপাশে দেওয়া হয়েছে কাঁটা তারের বেষ্টনী। অন্য কোনো জলদস্যু গ্রুপ যাতে জাহাজটিতে ফের আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য এমন নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে জাহাজটিতে। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল নিরাপত্তা কুঠুরি ‘সিটাডেল’ও। এখন ঝুঁকিপূর্ণ চ্যানেল অতিক্রম করায় আমাদের সবার টেনশন কমেছে।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা।