বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহজাহান আলীর (ওএসডি) অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে নেমে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ’ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের বগুড়া জেলা কার্যালয় জানতে পেরেছে, বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভাউচার তৈরি করে ২৮ খাত থেকে আত্মসাৎ করা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। দুদকের একটি চিঠি পর্যালোচনা করে এ তথ্য মিলেছে।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর ‘শাস্তিমূলক বদলির পরও অধ্যক্ষের লুটপাট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে দুদক।
১৪ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি কলেজ অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক শাহজাহান আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি যোগ দেন। এর পর থেকে গত ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেন।
কলেজ সূত্র জানায়, বর্তমানে ২৩ বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স, এইচএসসি (সব বিভাগ), ডিগ্রি (সব বিভাগ), উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এইচএসসি, বিএ এবং বিএসএস ও এমবিএ কোর্স চালু রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। কলেজে ২৭ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। শাহজাহান আলী সরকারি পরিপত্রবহির্ভূতভাবে সেশন ফির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন।
দুদকের তদন্ত করা অভিযোগ সরকারি খাতের মধ্যে রয়েছে– পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, কম্পিউটার সামগ্রী, মনিহারি, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, ক্রীড়া সামগ্রী, অনুষ্ঠান/উৎসবাদি, আসবাব কেনা, কম্পিউটার মেরামত ও ক্রয়, গবেষণাগার সরঞ্জামাদি, শিক্ষা উপকরণ ও কম্পিউটার এবং আনুষঙ্গিক। এই খাতগুলো থেকে মালপত্র/দ্রব্যাদি ক্রয় না করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব তহবিল থেকে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে সাবেক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন।
আর সাবেক অধ্যক্ষ (বর্তমানে ওএসডি) অধ্যাপক শাহজাহান আলী বলেন, এসব মিথ্যা অভিযোগ। আমার মানসম্মান নষ্ট করার জন্য একটি কুচক্রী মহল ভুল তথ্য দিচ্ছে। আমি কলেজের অনেক উন্নয়ন করেছি। কলেজ ফান্ডে প্রচুর টাকা রেখে এসেছি। আমি যে উন্নয়ন কাজ করেছি বিগত সময়ে কোনো অধ্যক্ষ তা করতে পারেননি।
কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান বলেন, দুদক আমাদের কাছে যেসব তথ্য চেয়েছে তা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।