ছবি: ন্যাশনাল ট্রিবিউন
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল যে ভবনে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, সেটিতে রেস্তোরাঁ করার অনুমোদন ছিল না। ভবনটি শুধু অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ, একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। ছিল মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম এবং পোশাক বিক্রির দোকানও।
নিচতলার একটি দোকানের সিলিন্ডার থেকে বেইলি রোডে আগুনের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন। তিনি বলেন, দ্রুত ফায়ার সার্ভিস সেখানে পৌঁছালেও অন্যান্য সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে মার্কেটে একটি মাত্র সিঁড়ি থাকায় মারা যাওয়া ব্যক্তিরা নামতে পারেননি। নিচে নামতে গিয়ে অনেকে পুড়ে গেছে।
বেইলি রোডের ওই ভবনে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় আগুন লাগে। এতে ৪৬ জন নিহত হন, এর মধ্যে ৩৭ মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তারা শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। ভবন থেকে ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজউক জানিয়েছে, ভবনটির অনুমোদন আটতলার। শুধু আটতলায় আবাসিক স্থাপনার অনুমোদন আছে।
রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রকল্পের পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভবনটির এক থেকে সাততলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তবে তা শুধু অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য। রেস্তোরাঁ, শোরুম (বিক্রয়কেন্দ্র) বা অন্য কিছু করার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনের নিচতলায় ‘স্যামসাং’ ও ‘গ্যাজেট অ্যান্ড গিয়ার’ নামের দুটি ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম বিক্রির দোকান, ‘শেখলিক’ নামের একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও ‘চুমুক’ নামের একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের একটি রেস্তোরাঁ, তৃতীয় তলায় ‘ইলিয়ন’ নামের একটি পোশাকের দোকান, চতুর্থ তলায় ‘খানাস’ ও ‘ফুকো’ নামের দুটি রেস্তোরাঁ, পঞ্চম তলায় ‘পিৎজা ইন’ নামের একটি রেস্তোরাঁ, ষষ্ঠ তলায় ‘জেসটি’ ও ‘স্ট্রিট ওভেন’ নামের দুটি রেস্তোরাঁ এবং ছাদের একাংশে ‘অ্যামব্রোসিয়া’ নামের একটি রেস্তোরাঁ ছিল।
অবশ্য ভবনের ছবিতে সপ্তম তলায় ‘হাক্কাঢাকা’ নামের একটি রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ড দেখা যায়, যা ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে আসেনি।
রাজউক যেমন বলছে, ভবনটিতে রেস্তোরাঁ বা পোশাকের দোকানের অনুমোদন ছিল না, তেমনি ফায়ার সার্ভিসও বলছে, ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বেইলি রোডে গিয়ে আজ সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh