বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমার বর্ডার গার্ড (বিজিপি), সেনাবাহিনী, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনী জেটিঘাট থেকে তাঁদের জাহাজে তোলা হয়।
এর আগে সকাল থেকে মিয়ানমার থেকে আসা ৩৩০ জনকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে উখিয়া, টেকনাফের বিভিন্ন স্কুল থেকে ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাটে নিয়ে আসা হয়।
হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিককালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী বিজিপি সদস্যসহ ৩৩০ জন মিয়ানমার নাগরিককে বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এর কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিকসহ সর্বমোট ৩৩০ জন।
বিজিবি মহাপরিচালক সাংবাদিকদের আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও সে দেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। অতি সম্প্রতি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এই সংঘর্ষের প্রভাব বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তেও এসে পড়ে।
প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে । ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত তিনটা থেকে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। পরদিন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরের ওপর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত হন। নিহত দুজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ। এ ছাড়া মিয়ানমার সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জন বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অ্ কিউ মোয়ে, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসিম আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম প্রমুখ।