× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ১০০ দিনে যা যা করতে চায়

ন্যাশনাল ট্রিবিউন রিপোর্ট

২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৫ এএম । আপডেটঃ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৬ এএম

ছবি সংগৃীত

পরিবেশ, বায়ু ও সব ধরনের দূষণ নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়ে কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করে ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। 

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এদিন থেকেই (২৫ জানুয়ারি) এটি নিয়ে কাজ শুরুর কথা বলেছেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ কর্মসূচিগুলো পড়ে শোনান। পরে এগুলোর ব্যাখ্যা করেন মন্ত্রী। 

এরমধ্যে অন্যতম কর্মসূচি হিসেবে বায়ুদূষণ ও উর্বর মাটির ক্ষয়ের জন্য প্রধানত দায়ী ঢাকায় চারপাশের ৫০০টি প্রচলিত ইটভাটাও ধ্বংস করা হবে এই সময়ের মধ্যে। পাশাপাশি পরিবেশ সম্মত ব্লক ইটের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া আইন হালনাগাদ করা, নীতি কাঠামো তৈরি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শিল্প কারখানার ইটিপি কার্যকরভাবে চালু রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ, পাহাড়, টিলা ও প্রাকৃতিক জলাধারের ম্যাপিং শুরু করা এবং জবরদখল হয়ে যাওয়া বনভূমি উদ্ধারে নতুন করে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে কর্মসূচিতে।

পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক ক্ষয়ক্ষতি তহবিল (লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড) থেকে আগামী পাঁচ বছরে কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ পাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। 

অনুষ্ঠানে বলা হয়, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ২০২৪ এ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও পরিবেশ সুরক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং এ মন্ত্রণালয়ের বর্ণিত চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার নির্ধারণ ও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ১০০ কর্মদিবসের এই কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে।

এছাড়া বায়ুদূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, পাহাড় কাটা ও জলাধার ভরাট রোধসহ পরিবেশ খাতে সুশাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। এ কর্মপরিকল্পনা জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি দ্রুত সাড়া দিতে মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সদিচ্ছা ও অঙ্গীকারের প্রতিফলন হবে বলে মন্তব্য করা হয়।  

কর্মসূচির মাধ্যমে বাড়ানো হবে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার জনবল কাঠামো হালনাগাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিএসওদের নিয়ে একটি ‘পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক’ গঠন করা হবে। আসন্ন বাজেটে ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন’ থিম অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) প্রস্তাব পাঠানো হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর পরিবীক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকারি নির্মাণে শতভাগ ব্লক ব্যবহারে সংশোধিত রোডম্যাপ অনুমোদন করা হবে ।বায়ুদূষণের প্রতিটি উৎস থেকে সৃষ্ট দূষণ মোকাবেলায় ন্যূনতম একটি করে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। বায়ুদূষণ রোধে দেশব্যাপী ন্যূনতম ৫০০ অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্লাস্টিক দূষণ হতে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের তালিকা করা হবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হবে। পণ্য প্রস্তুতকারক ও আমদানিকারকদের পণ্য হতে সৃষ্ট বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। শিল্প কারখানার ইটিপি কার্যকরভাবে চালু রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইন মনিটরিং চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। সচিবালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত ঘোষণা করা হবে। অন্যান্য সরকারি অফিসগুলোতে একই ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হবে। পরিবেশদূষণ রোধে প্রতি বিভাগে দু'টি করে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত স্কুল ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন ও উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রতি বিভাগে দু'টি করে ‘জিরো ওয়েস্ট ভিলেজ’ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

স্কুল-কলেজের সিলেবাস বা পাঠ্যবইকে সবুজায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পাহাড়, টিলা ও প্রাকৃতিক জলাধারের ম্যাপিং শুরু করা হবে। পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং সবুজ ক্যাটাগরিভুক্ত ছাড়পত্র ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’ এর আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ও সৃষ্ট সম্ভাব্য দূষণের পরিধি, মাত্রা এবং পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্যাটাগরি হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। জবরদখল হয়ে যাওয়া ৫০ হাজার একর বনভূমি উদ্ধারের প্রস্তাব প্রস্তুত করা এবং তা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। ইতঃপূর্বে পাঠানো ১ লাখ ৮৭ হাজার একর জবরদখল করা বনভূমি উদ্ধারের প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

পরিবেশ দূষণকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের হার পুনর্নির্ধারণ করা হবে। পরিবেশ, বন, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় উচ্চ আদালতের রায় যথাযথ বাস্তবায়নে পরিবীক্ষণ সুসংহত করা হবে। অর্থবহ ও কার্যকর সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবেশ ও জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ চূড়ান্তকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইউনেস্কোর উদ্যোগে এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আগামী এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ন্যাশনাল এডাপটেশন প্ল্যান এক্সপো আয়োজন করা হবে। 

মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় প্রস্তাবিত প্রস্তাবগুলো যাচাই বাছাইয়ের গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে। আন্তর্জাতিক লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আগামী পাঁচ বছরে কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ পাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। 

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.