× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

'দলিল ট্রাকার' ব্যাবহারে প্রতারণা থেকে রেহাই মিলবে

আনোয়ার হোসেন নবীন

১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৫২ পিএম । আপডেটঃ ১৫ জুলাই ২০২৪, ১৬:৪৭ পিএম

ফাইল ফটো

মোবাইল ওয়েবসাইট 'দলিল ট্রাকার' ব্যাবহার করে সাধারণ ক্রেতাদের ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা থেকে বাঁচানো ও সরকারি রাজস্ব আয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন জামালপুরের সাব-রেজিস্টার মোঃ শাহজাহান আলী। গত ছয় মাসে ওই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে তিনি দেড় কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় করেছেন।

তিনি জানান, জমি বেচাকেনায় একজনের সঙ্গে বায়না করে অন্য জনের কাছে বিক্রি, ব্যাংকের বন্ধকী সম্পত্তি  বিক্রি এবং সরকারি সম্পত্তি প্রতারণার মাধ্যমে হস্তান্তরসহ জমি সংক্রান্ত প্রতারণা থেকে বাঁচতে নব্য  উদ্ভাবিত 'দলিল ট্রাকার' ওয়েবসাইটির মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ ও সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

সাব-রেজিস্টার মোঃ শাহজাহান আলী আরো জানান, প্রায় জমি বায়না করার সময় যে মূল্য থাকে আর বিক্রি করার সময় কম মূল্য দেখানো হয়। বায়না মূল্য লুকানো হচ্ছে।  অথচ সম্পত্তির সর্বনিম্ন বাজার মূল্য সম্পর্কে আইনে বলা আছে, জমির বায়না মূল্যেই রেজিস্ট্রি করতে হবে। অনেকে এটা গোপন রেখে বড় ধরনের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। আমরা ওয়েবসাইটি ব্যবহার করে ৬ মাসে প্রায় দেড় কোটি টাকার মতো সরকারের রাজস্ব আদায় করেছি। 

তিনি আরোও বলেন, সারাদেশের সকল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ওই ওয়েবসাইট বাধ্যতামূলক করা হলে জমি রেজিস্ট্রি খাতে সরকারের রাজস্ব আয় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। কেননা বায়না দলিল রেজিস্ট্রির তথ্য, সরকারি সম্পত্তি ও ব্যাংকে বন্ধকী সম্পত্তির  পূর্ণ ডাটা সংরক্ষণ থাকায় দলিলে মূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে জমিটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একজন ক্রেতা পূর্ণ তথ্য পেলে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে পারবে। সারাদেশে ওয়েবসাইটির ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে পারলে অবৈধভাবে কোন কাজ করা সম্ভব হবেনা। জনগণের জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা কমানো সম্ভব হবে। মানুষ নির্ভেজাল একটা জমি কিনতে পারবে। 

মোবাইল ওয়েবসাইটির কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, কেউ জমি রেজিস্ট্রি করতে আসলে আমি এমনিতেই জিজ্ঞেস করি বায়না দলিল আছে কি-না। সাধারণত বিক্রেতারা বায়না মূল্যের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে চায়না। তখন আমি 'দলিল ট্রাকার' ওয়েবসাইটে জমির দাগ নম্বর দিয়ে ক্লিক করি। এরপর সাথে সাথে বের হয়ে আসে বায়নার বিস্তারিত তথ্য। তখন সম্পূর্ণ রাজস্ব দিতে বাধ্য হয় ক্রেতারা।

ওয়েবসাইটের অফিশিয়াল ব্যবহার  বিষয়ে তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিলে  ওয়েবসাইটি সহজে ব্যবহার উপযোগী করে প্রকাশ করা যাবে। ওয়েবসাইটি জনগণের কেমন উপকারে আসবে- সে বিষয়ে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার কেউ একই সম্পত্তি একাধিক বার বায়না, মর্গেজ করা জমি ও খাস জমি হস্তান্তর করে প্রতারণা করতে পারবেনা। 'দলিল ট্রাকার ওয়েবসাইট' ব্যবহার সম্পর্কে তিনি আরো বিশদ ব্যাখ্যা করে বলেন, যদি আমার রেজিস্ট্রি অফিসে কোন দলিল আসে। তখন আমি সার্চ দেই। ধরেন দাগ নম্বর ১২৩৪। শুধু দাগ নাম্বার দিয়ে সার্চ দিলেই ওই জমির সকল তথ্য চলে আসবে। সার্চের তিনটি অপশন রয়েছে। ১. মৌজার নম্বর। ২. খতিয়ান নম্বর। ৩. দাগ নম্বর। তিনটা যদি একসাথে দেয়া হয় তাহলেও হবে। আবার এই তিনটির দুইটি দিলেও হবে। একটা দিলেও হবে। যেভাবে দেয়া হবে সেই ভাবেই হবে। একটি দলিলে সাধারণত একটি দাগ নম্বর উল্লেখ থাকে। ওই নম্বর দিয়ে সার্চ দিলে আমাকে ফলাফল দিচ্ছে। জমিটি বায়না রেজিস্ট্রি করা আছে কিনা (যদি ইনপুট দেয়া থাকে) তখন দেখা যায়।

ওয়েবসাইটি ইন্ডিভিজুয়ালি তার এলাকারটা তিনি দেখেন। এবং তা প্রতিদিনের ডকুমেন্টগুলো ইনপুট দেয়া থাকলে যে কেউ তথ্য দেখতে পারবেন। 

সরকার যদি দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এই 'দলিল ট্রাকার' ওয়েবসাইটি বাধ্যতামূলক করে প্রত্যেক এলাকার ডকুমেন্টগুলো আপলোডের ব্যবস্থা করলে জমি সংক্রান্ত অনেক ধরনের ভোগান্তি কমবে। আমি আমার এলাকা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ডকুমেন্টগুলো ইনপুট দেই। তাই আমি আমারটা দেখতে পাই।

আমার  'দলিল ট্রাকার' ওয়েবসাইটের মত সরকার যদি সারাদেশে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস গুলোতে ওয়েবসাইট ব্যবহারে বাধ্যতামূলক করে দিলে জনগণের উপকারের পাশাপাশি রাজস্ব আয় বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.