ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদি হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিমের ভারতে পালিয়ে যাওয়া এবং সেখানে গ্রেপ্তারের তথ্য নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) দাবি করেছে, ফয়সাল ভারতে অবস্থান করছেন এবং তাকে সহায়তাকারীরা মেঘালয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে ভারতের মেঘালয় পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এই দাবিকে পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছে।
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, ফয়সাল করিম ও আলমগীর শেখ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। তিনি দাবি করেন, “ইনফরমাল চ্যানেলে মেঘালয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে আমরা জেনেছি, ফয়সালকে সহায়তাকারী পুত্তি ও সামি নামে দুজনকে তারা গ্রেপ্তার করেছে।”
পুলিশের তথ্যমতে, আসামিরা ঢাকা থেকে আমিনবাজার ও মানিকগঞ্জ হয়ে হালুয়াঘাট পৌঁছান। সেখান থেকে ফিলিপ নামে একজনের সহায়তায় সীমান্ত পার হয়ে মেঘালয়ের তুরা শহরে যান তারা।
ডিএমপির এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পরেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে মেঘালয় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়, বাংলাদেশের পুলিশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগ হয়নি। গারো পাহাড় অঞ্চলে অভিযুক্তদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং কোনো গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেনি। মেঘালয় পুলিশের দাবি, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই ঢাকা এই বিবরণ তৈরি করেছে।
একই সুরে বিএসএফ-এর মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের মহাপরিদর্শক ওপি উপাধ্যায় বলেন, “হালুয়াঘাট সেক্টর দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। এই দাবিগুলো ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর।”
হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। ডিএমপি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ফয়সালের বাবা, মা ও স্ত্রীসহ ছয়জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে তথ্য প্রত্যাখ্যান করায় প্রধান দুই আসামিকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এই অবস্থানের বিষয়ে পরে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।