সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরে তাঁর চিকিৎসা তদারকিতে থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে অত্যন্ত সংকটাপন্ন অবস্থায় ছিলেন তিনি।
ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরটি ইনকিলাব মঞ্চের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছিল, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সেই বার্তা পাওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর সুস্থতা কামনায় সরব ছিলেন শুভাকাঙ্ক্ষীরা। তবে সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই তরুণ সংগঠক।
গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলার শিকার হন ওসমান হাদি। ঘাতকের ছোঁড়া গুলি তাঁর মাথায় বিদ্ধ হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় গত সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত অনুযায়ী, এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও গুলিবর্ষণকারী ছিলেন ফয়সাল করিম মাসুদ। মোটরসাইকেল চালক হিসেবে তাঁর সঙ্গে ছিলেন আলমগীর শেখ। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, হামলার পর এই দুজন অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন মূল অভিযুক্ত ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির, মা হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া এবং শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু। এছাড়া অভিযুক্তদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে। মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।