দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর পরিধি ও কার্যক্রমে বড় ধরনের সংস্কার আনা হচ্ছে। এখন থেকে দুদকের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব প্রদান বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, প্রতি ছয় মাস অন্তর দুদকের কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনলাইনে (ওয়েবসাইটে) প্রকাশ করতে হবে।

এসব গুরুত্বপূর্ণ বিধান অন্তর্ভুক্ত করে 'দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের' খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, দুদক একজন চেয়ারম্যানসহ মোট তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে কাজ করে। নতুন সংশোধিত অধ্যাদেশের ফলে কমিশনের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, নতুন কমিশন হবে পাঁচ সদস্যের, যেখানে একজন নারী কমিশনার এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ কমিশনার অন্তর্ভুক্ত হবেন। এই পদক্ষেপ দুদককে আরও পেশাদার ও প্রযুক্তি-নির্ভর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সহায়তা করবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিশন গঠন করেছিল। সেই কমিশনের দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতেই দুদককে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম।

চূড়ান্ত অনুমোদন করা অধ্যাদেশে প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত 'বাছাই কমিটি' গঠনের বিধানটি বাদ দেওয়া হয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে, দুদক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়া এবং দুদকের কাজের প্রতিবেদন প্রতি ছয় মাস অন্তর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার বিধানটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

দুদক সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আরও তিনটি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে:

• মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশ
• রাজউক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ
• জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ