মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে তিনজনের মরদেহ। ছবি: সংগৃহীত
আজ শুক্রবার সকালে আঘাত হানা ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকাসহ তিন জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পুরান ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুই শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ঢাকা, নরসিংদী ও গাজীপুর—এই তিন জেলায় ভবন থেকে নামতে গিয়ে, রেলিং ধসে বা আতঙ্কে লাফিয়ে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পে সারা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৫.৭ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। এই মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পেই পুরান ঢাকায় দেওয়াল ধসে তিনজন এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি সীমানাপ্রাচীর চাপা পড়ে ১০ মাসের এক শিশুসহ মোট চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শোকবার্তায় আরও একজন নিহতের কথা বলা হলেও, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে:
নিহত আবদুর রহিম ও মেহেরাব হোসেনের স্বজনদের আহাজারি। মিটফোর্ড হাসপাতালে মর্গের সামনে। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, পুরান ঢাকার কসাইটুলী এলাকার একটি ভবনের রেলিং ধসে পড়লে তিনজন পথচারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান নিশ্চিত করেছেন, মিটফোর্ড হাসপাতালে তিনজনের মরদেহ আনা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে শিশু ফাতেমাকে কোলে নিয়ে তার মা কুলসুম বেগম (৩০) বাড়ির বাইরে দৌড়ে আসেন। প্রতিবেশী জেসমিন বেগমও (৩৫) ঘর থেকে বের হন। ঠিক তখনই সড়কের পাশে থাকা একটি সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়লে ঘটনাস্থলেই শিশু ফাতেমা ইটের নিচে চাপা পড়ে মারা যায়। আহত অবস্থায় মা কুলসুম বেগম ও জেসমিন বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভূমিকম্পের ফলে ঢাকা, নরসিংদী ও গাজীপুরে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল আতঙ্কিত হয়ে তাড়াহুড়ো করে নামা এবং ভবন থেকে লাফ দেওয়া।
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: আতঙ্কিত হয়ে হলের ভবন থেকে লাফ দেওয়ায় অন্তত চার শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
গাজীপুর: শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড এলাকার 'ডেনিমেক' নামের একটি পোশাক কারখানায় তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে দেড় শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। এছাড়া তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন আহত হয়েছেন।
নরসিংদী: নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ৪৫ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ৩ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। জেলা হাসপাতালে অজ্ঞান হয়ে ও প্যানিক অ্যাটাকের কারণেও অনেকে এসেছেন। সদরের চিনিশপুর ইউনিয়নে একটি একতলা ভবনের ছাদ ধসে দুই শিশুসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
