শুক্রবার সকালে তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। ভূমিকম্পের সময় পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলি এলাকায় একটি ভবনের রেলিং ধসে তিন পথচারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। হতাহতের এই ঘটনায় ঢাকা, নরসিংদী ও গাজীপুর—এই তিন জেলায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় নিহত তিনজনই পুরান ঢাকার কসাইটুলি এলাকার। এ ছাড়া ঢাকা, নরসিংদী ও গাজীপুরের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে।

নিহত: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান জানান, মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন মারা গেছেন।

নিহতদের মধ্যে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র রাফিউল ইসলাম (অন্য সূত্রমতে ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র) এবং আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী সবুজ নামের একজন রয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে প্রায় ৮ বছর বয়সী একটি শিশুর মরদেহও আনা হয়েছে, যার পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

মিটফোর্ড হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার সাজ্জাদ নিশ্চিত করেছেন, পুরান ঢাকা থেকে তিনজনের মরদেহ আনা হয়েছে।

• আহত: তিন জেলায় আহত অর্ধশতাধিক মানুষকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

• নরসিংদী জেলা হাসপাতাল: এখানে ৪৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

• ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: এখানে ১০ জন আহত হয়েছেন।
• গাজীপুরের তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: এখানেও ১০ জন আহত হয়েছেন।

• নরসিংদী ১০০ শয্যা হাসপাতালেও ১০ জন আহত হয়েছেন।

• স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টেলিফোনে এসব হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, সকালে ভূমিকম্পের সময় পুরান ঢাকার কসাইটুলি এলাকার ২২/সি কেপিগোজ স্ট্রিট গলির একটি পাঁচতলা ভবনের রেলিং ধসে পড়ে। সেই সময় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারীরা চাপা পড়েন।

লালবাগ বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, রেলিং ধসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনজন ঘটনাস্থলে নিহত হন।

সরেজমিনে সকালে দেখা যায়, কসাইটুলিতে দুর্ঘটনাস্থলে রক্ত পড়ে আছে এবং পাঁচতলা ভবনটির ভেঙে পড়া রেলিং সরাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস ঢাকা সদর জোন ১ এর জোন কমান্ডার এনামুল হক নিশ্চিত করেছেন, তারা ভবনের ভেতরে কেউ আটকা আছেন কি না, সে বিষয়ে খোঁজ করছেন।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সজিব বলেন, ভূমিকম্পের সময় সবাই ছুটাছুটি করছিল। পরে এখানে একজন শিশুসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ভূমিকম্পের এমন মর্মান্তিক ঘটনায় পুরান ঢাকা এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আহতদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।