× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কেন সাজা কম পেলেন সাবেক আইজিপি

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫১ এএম । আপডেটঃ ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ এএম

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড হলেও, একই মামলার অন্য আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সাজা হয়েছে মাত্র পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জানিয়েছে, এই মামলার অভিযোগ প্রমাণে 'অ্যাপ্রুভার' (রাজসাক্ষী) হয়ে ভূমিকা রাখা এবং দোষ স্বীকার করে নেওয়ার কারণেই আল-মামুনের প্রতি নমনীয়তা দেখানো হয়েছে। তবে এই নমনীয় সাজা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা, যারা তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দাবি করেছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করে। এই ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে প্রথম রাজসাক্ষী হিসেবে মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সাজা লঘু হওয়ার কারণটি রায়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।


ট্রাইব্যুনাল বলেছে:

"বিচারের ক্ষেত্রে তিনি (আল-মামুন) অবদান রেখেছেন। তাঁর অবদান স্বীকার করার সঙ্গে বস্তুগত সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনায় তাঁর সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে। যেখানে অপরাধের সম্পৃক্ততায় সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারত, কিন্তু তাঁর অবদান বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"



আবদুল্লাহ আল-মামুন ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেওয়ার সময় স্বীকার করেন যে, তিনি ৩৬ দিনের আন্দোলনের সব ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন।

রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়ার সময় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি ট্রাইব্যুনালকে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি 'লেথাল উইপন' (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে তিনি পেয়েছিলেন।

মামলার মোট পাঁচটি অভিযোগে (উসকানিমূলক বক্তব্য; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ; রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; চানখাঁরপুল ও আশুলিয়ায় মোট ১২ জনকে হত্যা) তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল।

রায়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত, হেলিকপ্টার ব্যবহার করে গুলি, প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল ও গুলি করে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই অপরাধে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় রায় শুনতে আজ সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন জুলাই যোদ্ধা অনেকে। ছবি: সংগৃহীত


শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় মেনে নিতে পারছেন না শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

রায় ঘোষণার সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থিত থাকা শহীদ মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সাংবাদিকদের বলেন, "যে রায় এসেছে, তাতে শহীদ পরিবার ও আহতরা সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হতে পারেনি। সাবেক আইজিপির রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। তাঁকে ন্যূনতম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হোক।"

শহীদ মাহামুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী বলেন, "আমরা সাবেক আইজিপির অন্তত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চাই।" শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামানও একই দাবি জানিয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশপ্রধানের দায়িত্ব পান এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকার সময় গত বছরের জুলাই মাসে তাঁর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছিল। যদিও ট্রাইব্যুনালে শুনানিতে জেরার সময় তিনি বলেছিলেন, দ্বিতীয়বারের মেয়াদ বৃদ্ধিতে তিনি আগ্রহী ছিলেন না। মানবতাবিরোধী অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা হয়েছে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.