× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সেনা সদরের সংবাদ সম্মেলন

পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা ‘হেফাজতে’, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ লাপাত্তা

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

১১ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৩৩ পিএম । আপডেটঃ ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪২ এএম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানাভুক্ত ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে রাখার কথা শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া সামরিক বাহিনীর ২৫ জন কর্মকর্তার মধ্যে চাকরিরত ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে এখনও লাপাত্তা রয়েছেন একজন কর্মকর্তা—মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ। সেনা সদর তাঁকে কর্মস্থলে 'অবৈধভাবে' অনুপস্থিত হিসেবে দেখছে।

আওয়ামী লীগ আমলের গুমের ঘটনায় দুটিসহ মোট তিনটি মামলায় ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে গত বুধবার (৮ অক্টোবর) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা।

শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেস আলফাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান এই তথ্য জানান। গুমের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি এবং তাঁদের গ্রেপ্তার না করায় জুলাই অভ্যুত্থানকারীদের ক্ষোভের মধ্যে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।

সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, তিনটি মামলায় মোট ২৫ জন সেনাসদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বর্তমানে কর্মরত ১৫ জন, এলপিআরে (অবসরের ছুটিতে) একজন এবং অবসরে আছেন ৯ জন।

তিনি বলেন, গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এলপিআর ও সার্ভিসে থাকা মোট ১৬ জনকে সেনা সদরে সংযুক্ত হতে বলা হয় এবং ৯ অক্টোবরের মধ্যে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন কর্মকর্তা সেনা সদরে এসেছেন এবং তাঁরা পরিবার থেকেও আলাদা থাকছেন।

সামরিক বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক মোট ২৫ জন কর্মকর্তার মধ্যে চাকরিরত ১৫ জনকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। লাপাত্তা একজনের বাইরে আটজন সামরিক বাহিনী থেকে এরই মধ্যে অবসর নিয়েছেন এবং একজন রয়েছেন অবসরের প্রক্রিয়ায় (এলপিআর)।

মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদের বিষয়ে মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, “তিনি ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়েছেন। এর পর থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে বলা হয়েছে যেন তিনি দেশত্যাগ করতে না পারেন।”

জানা যায়, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ সর্বশেষ সিলেটের স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকসে (এসআইএন্ডটি) কমান্ড্যান্ট পদে ছিলেন। তিনি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক।

সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল আরও জানান, পরোয়ানা জারির দিন তা সংশ্লিষ্ট ১৩টি দপ্তরে পাঠানোর কথা ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা জানালেও সেনাবাহিনী এখনও সেই পরোয়ানা হাতে পায়নি। তবে এরই মধ্যে তাঁরা পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এই কর্মকর্তাদের বিচার প্রচলিত আদালতে হবে, নাকি সামরিক আদালতে হবে—এ নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, “সেনাবাহিনী সংবিধান স্বীকৃত বাংলাদেশের সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি তুলেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এক বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, পরোয়ানা জারির পরও গ্রেপ্তার কার্যকর না হওয়ায় জনগণের আস্থা নষ্ট হচ্ছে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুতর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তিনি অভিযুক্ত সেনাসদস্যদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারপ্রক্রিয়া দৃশ্যমান করার আহ্বান জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ পাঠান বলেন, “গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও প্রশাসন কর্তৃক তাঁদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ আমরা এখনো দেখতে পারিনি... জুলাই অভ্যুত্থান–উত্তর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এ ধরনের দীর্ঘসূত্রতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” তিনি অবিলম্বে তাঁদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ৩২ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.