গুমের মতো জঘন্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে একটি নতুন আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪০তম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামের এই খসড়া আইনে গোপন আটক কেন্দ্র স্থাপন বা ব্যবহারকেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে গুমকে একটি চলমান অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং এর জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে, গুম সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষমতা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।
আইনের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- বিশেষ ট্রাইব্যুনাল: গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষার জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে।
- দ্রুত বিচার: অভিযোগ গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা থাকবে।
- সুরক্ষা ও সহায়তা: ভুক্তভোগী, তথ্য প্রদানকারী এবং সাক্ষীদের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
- ক্ষতিপূরণ: ভুক্তভোগীর জন্য ক্ষতিপূরণ ও আইনি সহায়তার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, এটি কেবল একটি নীতিগত অনুমোদন। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অধ্যাদেশটি আরও আলোচনার পর আবারও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
অন্যান্য সিদ্ধান্ত:
এই বৈঠকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- নীলফামারীর চিলাহাটি, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ এবং রাঙামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
- হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
- বাউল সম্রাট লালন সাঁইয়ের ‘তিরোধান দিবস’ (১৭ অক্টোবর) কে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।