× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ছেলে হত্যার বিচার: আদালতে নীরব কান্না, বেদনাবিধুর পিতা

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

২৭ আগস্ট ২০২৫, ২০:৫৮ পিএম । আপডেটঃ ২৭ আগস্ট ২০২৫, ২১:৫৪ পিএম

জুলাই গণ অভ্যুত্থানে নিহত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন

জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ প্রধান কৌঁসুলির সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। বিচার চলাকালে যখন তার ছেলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও দেখানো হয়, তখন তিনি নীরবে অশ্রু বিসর্জন দেন।

বুধবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এদিন আদালতে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত আবেগঘন। প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তার সূচনা বক্তব্যে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং তদন্তের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মাকসুদ কামালের একটি টেলিফোন কথোপকথনের বিবরণ পড়ে শোনান। ওই কথোপকথনে শেখ হাসিনাকে আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে বলতে শোনা যায়, "রাজাকারকে মেরেছেন, এখন এদেরও মারতে হবে।"

আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের সময় মামলার প্রধান কৌঁসুলি আদালতের অনুমতি নেন। এরপর যখন ভিডিওটি দেখানো শুরু হয়, তখন এজলাসে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন নীরবে চোখ মুছতে থাকেন। তার চোখেমুখে ছিল গভীর শোক আর বেদনা।

মামলার আসামিদের উপস্থিতি

আবু সাঈদ হত্যা মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার ছয়জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন– এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। সকালে পুলিশ তাদের প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে থেকে ট্রাইব্যুনালে আনে।

২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ খুব কাছ থেকে গুলি করে আবু সাঈদকে। গুলির আগে এক হাতে লাঠি নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিতে দেখা যায় তাকে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সেই ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ড কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রূপ দেয়। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান।

আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় গত ২৪ জুন। ৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়। ২৮ জুলাই ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। গত ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল এবং সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছিল।


এই মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যসহ ২৬ জন এখনো পলাতক রয়েছেন। গত ২২ জুলাই তাদের পক্ষে সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.