× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হচ্ছে ১২টি চীনা যুদ্ধবিমান

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৩০ এএম । আপডেটঃ ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১১:২১ এএম

চীনের তৈরি জঙ্গি বিমান জে-১০

প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে অত্যাধুনিক ১২টি জে-১০সি জঙ্গি বিমান কেনার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। চীনের তৈরি এই চতুর্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট (এমআরসিএ) কেনার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে চীনকে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বেইজিং সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।

বেইজিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে দুজন জ্যেষ্ঠ সদস্য জঙ্গি বিমান কেনার আগ্রহের বিষয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৬ মার্চ চার দিনের চীন সফরের সময় দুই দেশের শীর্ষনেতার আলোচনায় তিস্তা প্রকল্প, বন্দরের সঙ্গে চীনের কুনমিংয়ের সংযোগ এবং ১২টি অত্যাধুনিক জঙ্গি বিমান কেনার বিষয়ে কথা হয়। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিমানবাহিনীর জন্য এই জঙ্গি বিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে।

সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং জে-১০সি কেনার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানান। চীনের প্রেসিডেন্ট এই প্রস্তাবে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা ও চীনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে জঙ্গি বিমান কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার সফরের আগেই জে-১০সি কেনা নিয়ে উভয় দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছিল। এই সফরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ায় ক্রয় প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পথ সুগম হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

যে কারণে জে-১০সি:

চীনা সংবাদমাধ্যম 'গ্লোবাল টাইমস' এবং প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, জে-১০সি জঙ্গি বিমানটি 'ভিগোরাস ড্রাগন' নামেও পরিচিত। এটি চতুর্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট (এমআরসিএ), যা একইসঙ্গে একাধিক ধরনের সামরিক অভিযানে সক্ষম।

বহুমুখী সক্ষমতা: জে-১০সি শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে উড্ডয়ন করতে পারে এবং এটি শত্রুপক্ষের বিমান শনাক্তকরণে অত্যন্ত দক্ষ। এটি আকাশ থেকে আকাশে এবং আকাশ থেকে ভূমিতে হামলা চালাতে পারে। ২০০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতাও এর রয়েছে।

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ: এই বিমানটি অন্য জঙ্গি বিমান ও ড্রোনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, গতি এবং শত্রুর নজর এড়িয়ে আক্রমণ ও নজরদারি করতে সক্ষম।

যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকারিতা: গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংক্ষিপ্ত সংঘাতে জে-১০সি এর সামরিক সক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। তারা জানায়, এই বিমান দিয়ে ফ্রান্সের তৈরি রাফাল জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে।

প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:

সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জে-১০সি কেনার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেবে। তবে একইসঙ্গে এটি ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জও তৈরি করতে পারে। গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এই কেনাকাটা বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ালেও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে কিছুটা সতর্ক।

তিনি আরও বলেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমের দেশগুলোর ভূরাজনৈতিক সমীকরণ বিবেচনায় নিয়ে এই কেনাকাটার ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে এগোনো উচিত। কারণ, এটি পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে হুমকিতে ফেলতে পারে কিনা, তা বিবেচনায় রাখা জরুরি।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.