গাজায় চলমান নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতা বিশ্ববাসীর কাছে গোপন রাখতে একের পর এক গণমাধ্যমবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির পার্লামেন্ট ‘নেসেট’ সম্প্রতি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের কার্যক্রম বন্ধে যোগাযোগমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দিয়ে নতুন আইন পাস করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সত্যকে প্রধান শত্রু জ্ঞান করে ইসরায়েল এখন বিশ্ব জনমতকে সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হিসেবে দেখছে।
ইসরায়েল বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আদিল ইয়াসিন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার চিত্র যেন বিশ্ব দরবারে পৌঁছাতে না পারে, সেজন্যই তারা পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যম বন্ধের পথ বেছে নিয়েছে। নেসেটে অনুমোদিত নতুন এই আদেশের মাধ্যমে যোগাযোগমন্ত্রী শলোমো কারহি যেকোনো জরুরি অবস্থা ছাড়াই যখন-তখন বিদেশি মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা পেয়েছেন। যা মূলত স্বাধীন সাংবাদিকতা ও ন্যায়ের বিরুদ্ধে এক বিপজ্জনক যুদ্ধ।
বিশ্লেষকদের মতে, বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দেওয়া আন্তর্জাতিক আইন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরায়েল নিজেদের গণতন্ত্রের ‘মডেল’ হিসেবে দাবি করলেও, এই পদক্ষেপ তাদের দাবির অসারতাকেই প্রমাণ করে। তারা চায় না বিশ্বের মানুষ জানুক যে সেখানে ১০ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আদিল ইয়াসিন শাহাব আরও উল্লেখ করেন, ইসরায়েল সরকার উপলব্ধি করতে পেরেছে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিদেশি মিডিয়ার কল্যাণে বিশ্ব জনমত এখন ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। ফলে নিজস্ব বয়ান বা ‘প্রোপাগান্ডা’ টিকিয়ে রাখতে তারা সত্য গোপনকেই প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। সাংবাদিকদের কার্যক্রম বিঘ্নিত করে তারা মূলত নিজেদের নৃশংসতাকে আড়াল করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে।