ফাইল ছবি
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামক আশ্রমের আশ্রিত গরীব, অসহায় মানুষগুলোর যখন অপারেশনের প্রয়োজন হতো বা হাতে পচন ধরত।
তখন নিজে হাতে রোগীদের হাত-পা বা আঙুল ব্লেড দিয়ে কাটতেন মিল্টন সমাদ্দার। ব্লেড ছুরি দিয়ে কাটার কারণে অসহায় মানুষগুলো যখন অমানবিক কষ্ট পেতেন, আর্তনাদ করতেন।
তখন রক্ত ঝরিয়ে, অপারেশনের নামে হাত-পা কেটে মিল্টন সমাদ্দার পৈশাচিক আনন্দ পেতেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
হারুন অর রশীদ আক্ষেপ করে বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের মতো সাইকোপ্যাথ মানুষ কিভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়? তা আামাদের বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, মিল্টন স্বীকার করেছেন যে, এসব করে তিনি পৈশাচিক আনন্দ পেতেন। আমরা তার টর্চার সেল থেকে আলামত জব্দ করেছি। কথিত অপারেশন থিয়েটার থেকে ব্লেড ছুরি জব্দ করেছি।
ডিবি প্রধান বলেন, মিল্টন সমাদ্দার ভয়াবহ অপরাধ করেছেন। একটি দুটি অপরাধ করেননি, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভয়াবহ। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তার একাউন্টে এখনো ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আছে।
এতোগুলো টাকা থাকার পরও তিনি কাউকে চিকিৎসা করাননি। তিনি নিজেই হয়ে গেছেন অপারেশন থিয়েটারের হেড। তার অপারেশন থিয়েটারে থাকতো একটা ছুরি ও কিছু ব্লেড। তিনি এগুলো দিয়েই নিজেই অপারেশন করাতেন। এরকম ভয়াবহ, অমানবিক আচরণ বাংলাদেশের মানুষের জন্য লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, যারা তার সঙ্গে জড়িত, সহযোগিতা করেছে, ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়াতে সাহায্য করেছেন ও যারা ফাউন্ডেশনের মেম্বার তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।
তার আশ্রমে ৯০০ লোক মারা গেছে বলে নিজেই প্রচার করতেন উল্লেখ করে হারুন বলেন, মানুষগুলো মারা গেছেন। জানাজা হলো না, রাতের অন্ধকারে কবর দেওয়া হলো, আত্মীয়-স্বজনকে জানানো হলো না, ভুয়া সিল স্বাক্ষর দিয়ে নিজেই ডেথ সার্টিফিকেট দিলেন। সেগুলোর রেকর্ডও রাখলেন না, স্বজনদের জানালেনও না। এসবই আমাদের তদন্তে আসবে।
যেসব শিশু তার আশ্রমে ছিল তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, একটু ধৈর্য ধরেন সবই বেড়িয়ে আসবে। এরকম আরও মিল্টন সমাদ্দার যদি বাংলাদেশে থেকে থাকে, তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা নামে অপকর্ম করে থাকে তাদের ব্যাপারেও সব খবর বের হবে।
গত বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মিল্টন সমাদ্দার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা।
জালিয়াতির মাধ্যমে চিকিৎসক সেজে মৃত ব্যক্তির সনদ দেওয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মিরপুর থানার পুলিশ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh