× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

লাশের ২৬ টুকরা

ফাঁদ নাকি ত্রিভুজ প্রেম, র‍্যাব-পুলিশের দুই তথ্যে রহস্য

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:১৯ পিএম । আপডেটঃ ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৫৭ পিএম

রাজধানীর হাইকোর্ট মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক (৪২)।

রাজধানীর হাইকোর্ট মোড় এলাকা থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের (৪২) ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামির জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর ও পরস্পরবিরোধী তথ্য উঠে এসেছে। পুলিশ ও র‍্যাব শনিবার পৃথক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে। র‍্যাবের দাবি, এই নৃশংসতার নেপথ্যে ছিল ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা, যা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটে। অন্যদিকে, পুলিশ জানাচ্ছে, এই খুন মূলত একটি ত্রিভুজ প্রেমের করুণ পরিণতি।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জরেজুল ইসলাম (৩৯) ও শামীমা আক্তারকে (৩৩) গ্রেপ্তার করা হয়।


র‍্যাবের দাবি: ফাঁদ ও টাকা আদায় সকাল ১০টায় কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন। তিনি আসামি শামীমা আক্তারের জবানবন্দির বরাত দিয়ে বলেন, আশরাফুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছিলেন শামীমা ও তাঁর প্রেমিক জরেজুল।


ডিবি পুলিশের দাবি: ত্রিভুজ প্রেম দুপুর ১২টায় মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি ‘হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি’ জরেজুল ইসলামের জবানবন্দির বরাতে জানান, ঘটনাটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের পরিণতি।


র‍্যাব জানায়, শামীমা ও জরেজুলের এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ১১ নভেম্বর জরেজুল ও আশরাফুল রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন এবং ১২ নভেম্বর শামীমাসহ শনির আখড়ায় একটি বাসা ভাড়া নেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১২ নভেম্বর শামীমা আশরাফুলকে শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। এরপর অচেতন আশরাফুল ও শামীমার অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করা হয়। এই ভিডিও দেখিয়েই টাকা আদায়ের ছক ছিল।

দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে, জরেজুল তাঁকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন এবং মুখে স্কচটেপ লাগান। এরপর হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। অতিরিক্ত আঘাত এবং মুখে স্কচটেপ লাগানো থাকায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আশরাফুলের মৃত্যু হয়।

১৩ নভেম্বর সকালে মরদেহ গুম করার জন্য পাশের বাজার থেকে দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম ও সরঞ্জাম আনা হয়। পরে জরেজুল চাপাতি দিয়ে লাশ টুকরো টুকরো করে ড্রামে ভরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় হাইকোর্ট এলাকায় রেখে যান। র‍্যাব আশরাফুলের রক্তমাখা পাঞ্জাবি-পায়জামা, হত্যায় ব্যবহৃত দড়ি, স্কচটেপ ও ধারণকৃত ভিডিওটি উদ্ধার করেছে।

ডিবি জানায়, হত্যার মূল আসামি জরেজুল ইসলাম মালয়েশিয়া প্রবাসী। তিনি তিন বছর আগে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে শামীমার সঙ্গে পরিচিত হয়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। দেড় মাস আগে দেশে আসার পরও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

জরেজুলের স্ত্রী এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে জরেজুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আশরাফুলের সাহায্য চান এবং শামীমার নম্বর দেন। পরবর্তীতে আশরাফুলও শামীমার প্রেমে পড়ে যান এবং ভিডিও কলেই তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো।

এদিকে, শামীমা ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে জরেজুলকে জাপান পাঠানোর কথা বলেন, যার মধ্যে ৭ লাখ টাকা তিনি নিজেই দেবেন বলেও জানান। টাকা ও জাপানের কাজ শুরুর জন্য ১১ নভেম্বর জরেজুল ও আশরাফুল রংপুর থেকে ঢাকায় এসে শামীমার সঙ্গে শনির আখড়ায় বাসা ভাড়া নেন।

বাসায় এসে জরেজুল আশরাফুল ও শামীমার সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে শামীমা চিৎকার শুরু করলে জরেজুল আশরাফুলের হাত বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর আশরাফুলের মুখের ভেতরে ওড়না ঢুকিয়ে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে দিলে কিছুক্ষণ পরই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে তাঁরা দুজনে মিলে মরদেহ টুকরো করে ড্রামে ভরে হাইকোর্ট এলাকায় ফেলে দেন।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.