প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- এএফপি
দীর্ঘ চার বছর পর আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে গত শুক্রবার (২৮ জুন) আয়োজিত বিতর্কে মুখোমুখি হন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিতর্ক শেষ হওয়ার পর থেকে জো বাইডেনের প্রার্থীতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ডেমোক্রেটরা। বিতর্কে জো বাইডেন ঠিকমত কথা বলতে পারছিলেন না। এমনকি তাকে তোতলাতে ও অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতেও দেখা যায়। খবর আলজাজিরার।
ডেমোক্রেট দলের আইন প্রণয়নকারীরা জো বাইডেনকে পুনরায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে বলছে। যার ফলে নিজের অফিসে কঠিন সময় পার করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেনের প্রার্থীতার বিষয়টি কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে ট্রাম্পের সাথে বিতর্কে পরাজয়ের পর থেকে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্র নীতির ধারা ও বিপুল সংখ্যক অভিবাসীর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে, আদালতে সম্প্রতি ট্রাম্পের সাজার প্রসঙ্গটি তুলে তাকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।
বিতর্কের মাঝে চলমান এক জরিপে দেখা যায় ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতার প্রশ্নে বাইডেনের ওপর তাদের আস্থা নেই।
তবে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন বলছে, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশটির সব ভোটারদের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেন না। যারা বিতর্কটি দেখেছেন, আর এই জরিপে অংশ নিয়েছেন, শুধু তাদের মতামতই এই ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে রিপাবলিকপন্থিদের সংখ্যা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার (২ জুলাই) টেক্সাসের হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ লয়েড ডগেট প্রথম প্রকাশ্যে বাইডেনকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উচিত সময় থাকতে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা।’
কেএটিইউ নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের হাউস প্রতিনিধি মেরি গ্লুসেনক্যাম্প পেরেজ বলেন, ‘বিতর্কের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে। আমরা সবাই যা দেখেছি তাতে আমার মনে হয়, বাইডেন ট্রাম্পের কাছে হারতে চলেছেন। আমি জানি এটি একটি কঠিন মুহূর্ত আমাদের জন্য, তবে আমি মনে করি বিতর্কের ফলে বাইডেনের সমস্যা সকলের চোখে পড়েছে।’
এমএসএনবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে সাবেক হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং জিম ক্লাইবার্নও বাইডেনের অবস্থা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘বিতর্কের পরে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত ছিল।’
যদিও ডেমোক্রেট দলের নেতারা গত কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে বাইডেনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন, যা নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যোগ্যতার সমালোচনাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারাইন জিন-পিয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিতর্ক চলাকালীন বাইডেন অসুস্থ ছিলেন এবং বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার জন্য ঠিকমতো ঘুমাতে পারেননি তিনি। জনগণকে বলতে চাই জো বাইডেন আপনাদের জন্য কাজ করে।’
প্রেসিডেন্ট জো চলতে থাকা সমালোচনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘লাগাতার বিশ্বভ্রমণ করার জন্য আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। বিতর্কে আমি বুদ্ধিমত্তার সাথে জবাব দিতে পারিনি। ভ্রমণ সম্পর্কে আমি কারো কথা শুনিনি, যার ফলে অনুষ্ঠান চলাকালীন আমার ঘুম পাচ্ছিল।’
বিতর্কের পরে প্রকাশিত সিএনএন-এর একটি জরিপে তিন-চতুর্থাংশ ভোটার বলছেন, বাইডেন ছাড়া অন্য কাউকে ডেমোক্রেটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। ভোটারদের ৪৩ শতাংশ বাইডেনকে সমর্থন করছে এবং ট্রাম্পকে সমর্থন করছে ৪৯ শতাংশ ভোটার। যার ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসবেন বলে অনেকে ধারণা করছেন।
বিষয় : প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্র
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh