সংগৃহীত
লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে ৬১ জন অভিবাসী নিয়ে যাত্রা করা একটি কাঠের নৌকায় গ্যাসোলিনের ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট বিষক্রিয়ায় ১০ অভিবাসী নিহত হয়েছেন। জার্মান এনজিও রেসকিউশিপ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
লিবিয়া উপকূল থেকে যাত্রা করা নৌকাটি সোমবার (১৭ জুন) ভোরে ইতালির লাম্পেদুসা উপকূল থেকে ৪০ মাইল (৬০ কিলোমিটার) পশ্চিমে এসে ঝুঁকিতে পড়ে যায়।
ভূমধ্যসাগরের সক্রিয় সংস্থা এলার্ম ফোন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের মাল্টা উপকূলে অবস্থিত সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ জোন থেকে উদ্ধার করে জার্মান এনজিও রেসকিউশিপের মানবিক উদ্ধার জাহাজ ‘নাডির’।
রেসকিউশিপের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্টিফেন সেফার্ট সোমবার ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, আমরা যখন নৌকাটি খুঁজে পেয়েছিলাম তখন বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিল।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, আমাদের উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে উপরের ডেকে থাকা লোকদের উদ্ধার করে। পরে আমরা দেখতে পাই নৌকার ডেকের নিচেও লোক রয়েছে। জায়গাটি পানি ও পেট্রলের মিশ্রণে ভরা ছিল। সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় থাকা ১২ জনকে উদ্ধার করা হলেও তাদের মধ্যে দুইজন জীবিত ছিলেন।
স্টিফেন সেফার্ট বলেন, নৌকার ভেতর থেকে অচেতন ব্যক্তিদের বের করতে আমাদের একটি কুড়াল দিয়ে নৌকার বেশ কিছু অংশ ভাঙতে হয়েছিল। ১২ জনের মধ্যে ১০ জন মারা যান। আমাদের ধারণা তারা গ্যাসোলিনের ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন। যাত্রীরা সম্ভবত পেট্রল মিশ্রিত নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। পরে নৌকায় পানি ঢুকলে অজ্ঞান ব্যক্তিরা পানিতে ডুবে যান।
রেসকিউশিপের তথ্য অনুসারে, জীবিত উদ্ধার হওয়া ৫১ জনের মধ্যে ৩০ জন বাংলাদেশি এবং বাকিরা পাকিস্তান, মিশর ও সিরিয়ার নাগরিক। নিহতদের সবাই পুরুষ অভিবাসী। প্রাথমিকভাবে তাদের জাতীয়তা নিশ্চিত করা যায়নি।
রেসকিউশিপ জানিয়েছে, লিবিয়া থেকে যাত্রা করা কাঠের নৌকাটি অভিবাসী বোঝাই ছিল। যার ফলে স্থান সংকুলান হওয়ায় লোকদের ডেকের নিচে রাখা হয়েছিল। অচেতন দুই অভিবাসীকে উদ্ধার জাহাজ নাডিরে এনে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল।
এ ঘটনার দুই ঘণ্টা পর ইতালির উপকূলরক্ষীরা এসে পৌঁছায়। তারা এই দুই ব্যক্তিসহ মোট ৫১ জন উদ্ধার করে।
রেসকিউশিপ অভিযোগ করেছে, ইতালীয় কোস্টগার্ডরা আপাতত মরদেহগুলো উদ্ধার না করায় সেগুলো আমাদের উদ্ধার জাহাজে আছে। কিন্তু আমাদের পালতোলা নৌকায় লাশ রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আমরা তাদের নামিয়ে দিতে লাম্পেদুসা উপকূলের দিকে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি সোমবার রাতের মধ্যে সেখানে পৌঁছে যাব।
সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর অভিবাসন রুটগুলোর মধ্যে একটি। যুদ্ধ এবং দারিদ্র্য থেকে বাঁচতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করতে চাওয়া অভিবাসীরা ব্যাপকভাবে এই রুট ব্যবহার করেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) অনুসারে, গত বছর প্রায় তিন হাজার ১৫০ জন অভিবাসী ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হয়েছে। ২০২২ সালে এ সংখ্যাটি ছিল দুই হাজার ৪১১ জন।
বিষয় : লিবিয়া ইতালি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি অভিবাসী
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh