× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গাজার শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে : জাতিসংঘ

ন্যাশনাল ট্রিবিউন রিপোর্ট

১৭ মার্চ ২০২৪, ০০:৩২ এএম । আপডেটঃ ১৭ মার্চ ২০২৪, ০০:৫২ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ,  হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে করে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে।

এরসঙ্গে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজার শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। রোববার (১৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় পরিচালিত জাতিসংঘের প্রধান সাহায্য সংস্থা বলেছে, ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডের উত্তরে তীব্র অপুষ্টি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। অন্যদিকে হামাসের সাথে বন্দি চুক্তির বিষয়ে নতুন যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য কাতারে প্রতিনিধি দল পাঠাতে প্রস্তুত ইসরায়েল।

শনিবার ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ) বলেছে, উত্তর গাজায় দুই বছরের কম বয়সী প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু এখন তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে। সংস্থাটির এই বক্তব্য দুর্ভিক্ষের বিষয়ে ইসরায়েলের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, ‘গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং বর্তমানে তা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

এদিকে গত শুক্রবার ইসরায়েল বলেছে, হামাস জিম্মি এবং বন্দিদের বিনিময়ের সাথে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি নতুন প্রস্তাব পেশ করার পরে মধ্যস্থতাকারীদের সাথে আরও আলোচনার জন্য কাতারে তারা একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে।

আলোচনার বিষয়ে অবগত একটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া। অবশ্য আলোচনা শুরুর আগে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, হামাসের প্রস্তাবটি এখনও ‘অবাস্তব দাবির’ ভিত্তিতেই করা হয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, এক সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া পবিত্র রমজানের আগে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে বারবার প্রচেষ্টা চালানো হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে এবং ইসরায়েল এখন বলছে, তারা দক্ষিণ গাজার রাফাহতে নতুন করে আক্রমণ শুরু করার পরিকল্পনা করছে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অবশ্য রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ গাজার এই শহরে বর্তমানে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির ২৩ লাখ বাসিন্দার অর্ধেকেরও বেশি আশ্রয় নিয়েছেন। শলৎস বলেছেন, রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে ‘অনেক ভয়ঙ্কর বেসামরিক হতাহতের’ আশঙ্কা রয়েছে।

তবে গত শুক্রবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, রাফাহতে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন নেতানিয়াহু এবং (এর আগে) বেসামরিক জনগণকে সরিয়ে নেওয়া হবে। অবশ্য হামলার বিষয়ে নেতানিয়াহুর কার্যালয় কোনও সময়সীমা দেয়নি এবং হামলার বিষয়ে গাজার এই অঞ্চলে অতিরিক্ত প্রস্তুতির কোনও তাৎক্ষণিক প্রমাণও পাওয়া যায়নি।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩১ হাজার ৫৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত এসব বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনির বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৩ হাজার ৫৪৬ জন।

ইসরায়েলের বর্বর এই আগ্রাসন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিকে কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছে এবং প্রায় সমস্ত বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। এছাড়া নির্বিচার এই আক্রমণ গাজায় বিশাল ক্ষুধা ও মানবিক সংকটের সূত্রপাত করেছে।

ইউএনআরডব্লিউএ এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছে, গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং তা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গাজার হাসপাতালগুলো অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুদের মৃত্যুর খবরও দিয়েছে।

এমন অবস্থায় আরও বেশি পরিমাণে সাহায্যের প্রবেশাধিকার দিতে ইসরায়েলকে আরও কিছু করার আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

এছাড়া জাতিসংঘ বলেছে, তারা সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘অপ্রতিরোধ্য বাধার’ সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে ক্রসিং বন্ধ, কঠোর তল্লাশি, চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এবং গাজার অভ্যন্তরে অস্থিরতার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.