× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ভারতের সংবিধান থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ বাদ দিতে মামলা

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫৭ এএম । আপডেটঃ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫৮ এএম

ফাইল ছবি

সংবিধানের প্রস্তাবনার তারিখ অপরিবর্তিত রেখে সংশোধন আনা যায় কি? ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এ প্রশ্ন তুলেছেন। গতকাল শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সর্বোচ্চ আদালতে সংবিধানের প্রস্তাবনায় সংশোধনসংক্রান্ত এক জনস্বার্থ মামলা করা হয়। তখনই বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও দীপংকর দত্ত এ প্রশ্ন তোলেন।

সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হওয়া এ মামলার উদ্দেশ্য সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘সোশ্যালিস্ট’ বা ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘সেক্যুলার’ বা ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া। সে জন্য বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ও আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন ওই জনস্বার্থ মামলা করেছেন।

গতকাল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ২৯ এপ্রিল ধার্য করার পাশাপাশি বিচারপতি দীপংকর দত্ত জানতে চান, প্রস্তাবনা গৃহীত হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর। প্রস্তাবনায় তা উল্লেখ করাও রয়েছে। তারিখ ও বছর অপরিবর্তিত রেখে সেই প্রস্তাবনা কি সংশোধন করা যায়? তিনি বলেন, এটা একটা একাডেমিক বা সাধারণ আগ্রহসংক্রান্ত প্রশ্ন।

বিচারপতির ওই আগ্রহমিশ্রিত প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গেই সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেন, ‘এটাই আসল কথা। আবেদনের মূল বিষয়ও তা।’

ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা যখন গৃহীত হয়েছিল, তখন তাতে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দুটি ছিল না। ওই দুই শব্দ ঢোকানো হয় ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনী এনে। প্রস্তাবনা গৃহীত হওয়ার ২৭ বছর পর ওই দুই শব্দের অন্তর্ভুক্তি হলেও তারিখটি অপরিবর্তিত রাখা হয়। দুই আবেদনকারী সে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ওই কাজ অবৈধ। সংসদে আলোচনা না করে ওই সংশোধন আনা যায় না।

এবিষয়ে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেন, ওই সংশোধনী আনা হয়েছিল সেই সময়, যখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি ছিল। ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বামী ও জৈনর আবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধান রচয়িতারা প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ রাখতে চাননি। চাইলে শুরুতেই তা থাকত। ওই দুই শব্দ প্রস্তাবনায় জোর করে ঢোকানো হয়েছে।

বিচারপতি দত্ত সেই সময় মন্তব্য করেন, সম্ভবত এটা একমাত্র প্রস্তাবনা, যেখানে নির্দিষ্ট তারিখ ও বছর উল্লেখ রয়েছে। আইনজীবী জৈন বলেন, প্রস্তাবনায় তারিখ ও বছর লেখা থাকার কারণেই তা আলোচনা ছাড়া সংশোধন করা যায় না।

আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন ও তাঁর বাবা হরিশঙ্কর জৈন অযোধ্যা মামলা থেকে শুরু করে বর্তমানে জ্ঞানবাপির মতো বহু মামলার সঙ্গে যুক্ত। হরিশঙ্কর জৈনর আবেদনে সাড়া দিয়েই বাবরি মসজিদের তালা খোলা হয়েছিল।

বাবা-ছেলে মিলে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন আদালতে শতাধিক মামলা লড়ছেন। প্রতিটির উদ্দেশ্য হিন্দুত্ববাদের প্রতিষ্ঠা ও প্রসার। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির-জ্ঞানবাপি মসজিদ, মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি-শাহি ইদগাহ মসজিদ ছাড়াও তাঁরা কুতুব মিনার ও তাজমহলের ‘হিন্দু চরিত্র’ নিয়ে মামলা করেছেন। তাঁদের দাবি, কুতুব মিনার ও তাজমহলও হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি।

ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্রের’ মর্যাদা দিতে গেলে সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ বাদ দেওয়া দরকার। সেই লক্ষ্যেই এ মামলা। এর বিরোধিতা করে সিপিআইয়ের রাজ্যসভা সদস্য বিনয় বিশ্বমও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন।

আবেদনে বিশ্বম বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও ‘সমাজতন্ত্র’ ভারতীয় সংবিধানের জন্মগত সহজাত মৌলিক চরিত্র। তা বানচাল করাই ওই আবেদনকারীদের উদ্দেশ্য, যাতে রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মের নামে ভোট চাইতে পারে। তাঁর আরজি, সুপ্রিম কোর্টের উচিত অবিলম্বে ওই আবেদন খারিজ করা।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006 ,01922575574

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.