ওড়িশায় বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে মুর্শিদাবাদের এক পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই নৃসংসতার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের ওপর চলমান নিগ্রহের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। একইসঙ্গে নিহত যুবকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নিহত যুবকের নাম জুয়েল শেখ, যার বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকায়। জীবিকার তাগিদে ওড়িশার সম্বলপুরে কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, গত বুধবার বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে তাঁকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে একদল দুষ্কৃতী নৃশংসভাবে মারধর করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনা জানাজানি হতেই মুর্শিদাবাদসহ রাজ্যজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে সরাসরি বিজেপি ও ওড়িশা সরকারকে আক্রমণ করে লেখেন, “বাংলা ভাষায় কথা বলা কোনো অপরাধ হতে পারে না। প্রতিটি বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষদের ওপর যে নির্মম অত্যাচার ও নিগ্রহ চলছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের সরকার দৃঢ় অবস্থান নেবে।” তিনি আরও জানান, জঙ্গিপুর এলাকার আরও বেশ কয়েকজন শ্রমিক সম্প্রতি ওড়িশায় নিগৃহীত হয়ে আতঙ্কে বাড়ি ফিরে এসেছেন, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
ঘটনাটি ওড়িশার হলেও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ইতিমধেই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। সুতি থানায় একটি ‘জিরো এফআইআর’ রুজু করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একটি বিশেষ দল ওড়িশায় গিয়েছে। রাজ্য সরকার পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
সরকারি সহায়তা
নিহত শ্রমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর্থিক ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানান, নিগৃহীত ও সন্ত্রস্ত পরিযায়ী পরিবারগুলোর সব ধরনের প্রয়োজনে রাজ্য সরকার সবসময় পাশে থাকবে।