ভারতের ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা মুফতি। ওডিশায় এক বাঙালি মুসলিম শ্রমিককে ‘বাংলাদেশি’ অপবাদে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতকে ‘লিঞ্চিস্তান’ বা ‘গণপিটুনির দেশ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। একইসঙ্গে দেশটির বিচারব্যবস্থার ‘রাজনৈতিকীকরণ’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মেহবুবা মুফতি নিজেও।
সম্প্রতি ওডিশায় জুয়েল শেখ (১৯) নামে এক বাঙালি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার একটি প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ শেয়ার করেন ইলতিজা। সেখানে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “ইন্ডিয়া, ভারত বা হিন্দুস্তান নয়; তোমার নাম এখন লিঞ্চিস্তান।” তিনি অভিযোগ করেন, ভারতে গণপিটুনির সংস্কৃতি মহামারি আকার ধারণ করেছে, যা দেশের মূল পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
মেয়ের মন্তব্যের রেশ ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে পিপিডি প্রধান মেহবুবা মুফতি বলেন, “বাংলাদেশে যা ঘটছে তা আমাদের ব্যথিত করে। কিন্তু যারা প্রতিবেশী দেশের সমালোচনা করছেন, তারা নিজ দেশে চোখের সামনে গণপিটুনি দেখেও চুপ থাকছেন।”
কাশ্মীরি বন্দিদের নিজ রাজ্যের কারাগারে ফিরিয়ে আনার একটি আবেদন (পিআইএল) সম্প্রতি হাইকোর্ট খারিজ করে দেওয়ায় আদালতেরও তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। আদালত মেহবুবাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচার বিভাগ ব্যবহারের’ দায়ে অভিযুক্ত করায় তিনি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “রাজনীতিবিদরা জনগণের প্রতিনিধি। সাধারণ মানুষের কষ্ট নিয়ে কথা বলা যদি রাজনীতি হয়, তবে আমি সেই রাজনীতিই করব। বিচার বিভাগের কাজ আমার চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ করা নয়।”
উগ্রবাদ ও কাশ্মীরিদের নিরাপত্তা
মেহবুবা মুফতি অভিযোগ করেন, গত ৭২ ঘণ্টায় হিমাচল, উত্তরাখণ্ড ও হরিয়ানায় কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ওপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। উগ্র ডানপন্থী কর্মীরা তাদের নির্দিষ্ট স্লোগান দিতে বাধ্য করছে এবং অস্বীকার করলে মারধর করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ও প্রশাসন যদি এই অসহিষ্ণুতা থামাতে ব্যর্থ হয়, তবে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়বে।