বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ভারতের আসাম রাজ্যে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে চারটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। গতকাল শনিবার গুয়াহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচির চেষ্টা করলে পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়। উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভারতের দিল্লি, আগরতলা ও শিলিগুড়ির বাংলাদেশ মিশনগুলোতে আজও ভিসা সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার বিকেলে গুয়াহাটির বাংলাদেশ মিশনের কাছে হিন্দুরাষ্ট্র দাবি সমিতি, হিন্দু যুব-ছাত্র পরিষদসহ চারটি সংগঠনের প্রায় ৭৫ জন সমর্থক বিক্ষোভ শুরু করেন। মিশনের পক্ষ থেকে আগেভাগেই স্থানীয় প্রশাসনকে বাড়তি নিরাপত্তার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। ফলে বিক্ষোভকারীরা মিশনের প্রধান ফটকের দিকে এগোতে চাইলে ১০০ মিটার দূরেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পরে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধিদল মিশনে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর আগে শুক্রবারও একই স্থানে ময়মনসিংহের দীপু দাস হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন ইস্যুতে স্লোগান দিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা।
অন্যান্য মিশনে ভিসা সেবা স্থগিত
গত কয়েক দিনের অস্থিরতার পর গতকাল দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা ও মুম্বাইয়ে কোনো নতুন বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে দিল্লি, আগরতলা ও শিলিগুড়ি মিশনে আজ রোববারও ভিসা কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। ঢাকা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে। তবে মুম্বাই মিশন সোমবার থেকে পুনরায় ভিসা সেবা চালুর ইঙ্গিত দিয়েছে।
গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল দাবি করেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর ২ হাজার ৯০০টির বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তার এই পরিসংখ্যান নিয়ে গভীর বিস্ময় ও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশি কূটনীতিকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কূটনীতিক জানান, হঠাৎ করে এত বিপুল সংখ্যক সহিংসতার তথ্য কোথা থেকে এবং কীভাবে এলো, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নাকচ করে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিক রং না দিতে দিল্লিকে আহ্বান জানিয়ে আসছে।