বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের আচেহ তামিয়াংয় এলাকায় কাদা মাটিতে নিজের বাড়ির সামনে হাঁটছেন একজন নারী। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা ভারী বৃষ্টি, বন্যা এবং ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রলয়ংকরী দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ায় খাদ্যসংকটসহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশগুলোর উদ্ধারকারী দল ও স্বেচ্ছাসেবীরা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে আল-জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে।
শনিবার সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষ এই হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
গত ২৭ নভেম্বর দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় 'ডিটওয়া' নামের একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে।
ইন্দোনেশিয়া
সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ প্রদেশে কমপক্ষে ৯০৮ জন নিহত হয়েছেন। এখনো ৪১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। দ্বীপটিতে ৮ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আচেহ প্রদেশের গভর্নর মুজাকির মানাফ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, উদ্ধারকারী দল এখনো 'কোমরসমান গভীর কাদা' থেকে মরদেহ খুঁজছে। তবে সবচেয়ে বড় হুমকি হলো দূরবর্তী ও দুর্গম গ্রামগুলোতে সৃষ্ট তীব্র খাদ্যসংকট। গভর্নর মুজাকির সতর্ক করে বলেন, "মানুষ বন্যায় মারা যাচ্ছে না, বরং অনাহারে মারা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন এ রকমই।" তিনি জানান, আচেহের দূরবর্তী অনেক এলাকা এখনো সাহায্যের বাইরে রয়ে গেছে।
শ্রীলঙ্কার জরুরি অবস্থা
শ্রীলঙ্কা সরকার এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে মন্তব্য করে জাতীয় জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছে।নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০৭ জনে, এবং ২১৪ জন এখনো নিখোঁজ। নিখোঁজদের অধিকাংশই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ বা ২০ লাখের বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, ৭১ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৫ হাজার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির কর্মকর্তারা শুক্রবার সতর্ক করেছেন যে, টানা ভারী বৃষ্টিতে নতুন করে ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ডিএমসি পূর্বাভাস দিয়েছে, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলসহ দেশের অনেক এলাকায় আবারও বৃষ্টি হতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডে বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৭৬ জন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভূমিধসের কারণে দুজন করে মোট চারজন নিহত হয়েছেন।
উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি সহায়তা আশা করছে।
বিষয় : বন্যা শ্রীলঙ্কা থাইল্যান্ড বৃষ্টিপাত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006 ,01922575574
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
