মার্কিন কংগ্রেসে চিঠি পাঠানোর উদ্যোগের নেতৃত্ব দেওয়া দুই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য গ্রেগ কাসার (বাঁয়ে) এবং প্রমীলা জয়পাল (ডানে)। ছবি: ডন
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্রের উপর দমন-পীড়নের অভিযোগে পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রেপ্রেজেন্টেটিভস) ৪২ জন সদস্য। একই সাথে তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ দেশটিতে আটক সকল রাজনৈতিক বন্দীর দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (ডনসহ পাকিস্তানি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এটি মার্কিন-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য প্রমীলা জয়পাল ও গ্রেগ কাসার-এর নেতৃত্বে পাঠানো এই চিঠিতে পাকিস্তানের দ্রুত অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং দেশজুড়ে চলমান দমন-পীড়নের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। স্বাক্ষরকারী ৪০ জন কংগ্রেস সদস্যের মধ্যে ফিলিস্তিনপন্থি মুসলিম সদস্য ইলহাম ওমর ও রাশিদা তায়েব-ও রয়েছেন।
চিঠিতে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
কংগ্রেস সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, যেসব কর্মকর্তা "রাষ্ট্রের ক্ষমতার অস্ত্রীকরণ করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কারাবন্দী করেন, বিদেশে বসবাসরত নাগরিকদের হুমকি দেন ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেন," ওয়াশিংটন যেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
চিঠিতে মূলত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করার কারণেই কর্মকর্তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। কংগ্রেস সদস্যদের মূল অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। অসংখ্য মার্কিন নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পাকিস্তানি নাগরিক যারা পাকিস্তান সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তারা হুমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি তাদের পাকিস্তান নিবাসী আত্মীয়-স্বজনদেরও আটক, প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বা জোর করে কিছু করতে বাধ্য করার মতো কৌশলের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। আইনপ্রণেতারা হুঁশিয়ার করেছেন যে, পাকিস্তান কর্তৃত্ববাদী শাসনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রমাণ হিসেবে তারা বিনা অভিযোগে বিরোধী দলের নেতাদের আটক, নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের হয়রানি বা জোর করে নির্বাসন, এবং সাধারণ নাগরিকদের সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের জেরে গ্রেপ্তারের মতো ঘটনার উল্লেখ করেছেন। দেশজুড়ে নারী, সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা, বিশেষত বেলুচিস্তানে, মাত্রাতিরিক্ত সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো:
ভার্জিনিয়া-ভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিক আহমাদ নুরানি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তার ভাইদের অপহরণ করে এক মাসেরও বেশি সময় আটক রাখা হয়।
এছাড়াও, ২০২৪ সালের নির্বাচনের অনিয়ম নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সদস্যরা। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইতিপূর্বেও এই অনিয়ম নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছিল।
চিঠির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বা ওয়াশিংটনে নিযুক্ত দূতাবাস কোনো মন্তব্য করেনি। তবে কংগ্রেস সদস্যরা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ১৭ ডিসেম্বর-এর মধ্যে এই চিঠির জবাব দিতে সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, তার ওপরই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের গতিপথ।
বিষয় : পিটিআই ইমরান খান পাকিস্তান মার্কো রুবিও কংগ্রেস
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006 ,01922575574
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
