মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে ডিজেল ট্যাংকারের সঙ্গে বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪২ জন ভারতীয় ওমরাহযাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছেন এবং তারা মূলত ভারতের হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গেছে। আজ সোমবার সকালে (ভারতীয় সময় শনিবার দিবাগত রাত দেড়টা) মদিনা থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে মুহরাস/মুফরিহাট এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
গাল্ফ নিউজ সূত্রে জানা গেছে, মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করা ওমরাহযাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে একটি ডিজেল ট্যাংকারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের তীব্রতায় তাৎক্ষণিকভাবে বাসে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমন্ত থাকায় তারা বাস থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ পাননি, যার ফলে হতাহতের সংখ্যা এত বেড়েছে।
অনানুষ্ঠানিক সূত্র অনুযায়ী, নিহত ৪২ জনের মধ্যে ১১ জন নারী ও ১০ জন শিশু ছিল। ঘটনাস্থলে ছুটে আসা উদ্ধারকারী দল পরিস্থিতিকে 'মর্মান্তিক' বলে উল্লেখ করেছে। সংঘর্ষের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে বাসটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় এবং নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, যাত্রীদের মধ্যে একজন প্রাণে বেঁচে গেলেও তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সৌদি আরবের নাগরিক সুরক্ষা দপ্তর এবং পুলিশের পাশাপাশি ভারতীয় কর্মকর্তা ও ওমরাহ এজেন্সির প্রতিনিধিরা উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রিয়াদের ভারতীয় দূতাবাস এবং জেদ্দা কনস্যুলেট ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে।
ইতিমধ্যে জেদ্দায় অবস্থিত ভারতের কনস্যুলেট একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছে। হতাহতদের পরিবারের সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টোল ফ্রি নম্বর (৮০০২৪৪০০০৩) এ কল করে সর্বশেষ তথ্য জানতে পারবেন।
তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারও রিয়াদে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি নয়াদিল্লির কর্মকর্তাদের সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।